গত ১৬ই মে ২০২২ ইং তারিখে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় সায়েদা আক্তার (৭) নামে এক শিশুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে শিশুটির বাড়ির পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিশু সায়েদা কুতুবপুর গ্রামের মো. দিলু মিয়া ও রোজিনা বেগম এর মেয়ে।
এই ঘটনায় শিশুটির মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে খালিয়াজুরী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-০৫, তারিখ ১৬ই মে ২০২২ ইং। মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে মামলার আসামীগন এলাকার নিরীহ মানুসের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য। এই মানষিক চাপ ও হুমকি সহ্য করতে না পেরে পুলিশ সহ মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব, সচিব জননিরাপত্তা বিভাগ, সচিব- মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, পুলিশ মহা-পরিদর্শক, ডি,আই.জি ময়মনসিংহ রেঞ্জ ও পুলিশ সুপার নেত্রকোনা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন একই গ্রামের মোঃ সেলিম মিয়া।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন – মামলার বাদী ও বিবাদীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে বিরোধ চলিয়া আসিতেছে যা এলাকায় বসত করার সুবাদে লোক মুখে জানা। কিন্তু ঘঠনার দিন কি নিয়ে এই হত্যা কান্ড সংঘটিত হয়েছে বা কে হত্যা করেছে তার কিছুই আমি বা আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জানা নাই। উক্ত ঘটনায় মামলা হওয়ার পর থেকেই আমি এবং আমার ভাই ও তাদের বৌদের কে আসামীগন বলে জাচ্ছেন আমরা যেন স্বাক্ষীদেই যে, মেয়েটিকে তার নিজ বাবা হত্যা করেছে, আর এই স্বাক্ষী না দিলে আমাদের কে পুলিশ দিয়ে অন্য মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। আমরা বলেছি আমরা তো কিছুই জানিনা কারো পক্ষে বা বিপক্ষে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে পারবো না। এরপর থেকেই রাতের বেলায় একদল পুলিশ সাথে নিয়ে এই মামলার আইও এস.আই জিকরুল ইসলাম আমাদের বসত বাড়ীর দরজায় রাত ২টা/৩টায় ডাকাডাকি করে আমাদের কে বলেন আমরা এই মামলায় স্বাক্ষী দিতে হবে এবং শিশু মেয়েটিকে তার বাবা ও পরিবারের লোকজনই হত্যা করেছে বলে স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য, না হয় এই মামলায় আমাদের কে ধরে নিয়ে চালান দিয়ে দিবে জানান ।
এরপর গত ২৫/০৫/২০২২ ইং তারিখে আমাদের একই গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মোঃ মোক্তার হোসেন’কে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে তাকে হাত-পাঁ বেধে থানায় অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করে। তারপর খালিয়াজুড়ী থানার দালাল মুজিবুরের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে থানা থেকে মুক্তিপান বলে জানতে পারি। পরবর্তীতে মোক্তার হোসেনের সাথে দেখা হইলে কেন ধরে নিয়ে গেছিলো এবং কেন ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ছাড়া পেত হলো জিজ্ঞাসা করিলে ভোক্তভোগী মোক্তার হোসেন বলেন আমাকে থানায় নিয়ে মারধর করে মামলায় স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য যে, মেয়েটিকে তার বাব ও পরিবারের লোকজন হত্য করেছে, পরে আমি অস্বীকার করিলে থানার এস.আই জিকরুল ইসলাম ও দালাল মুজিবুর বলেন ৭০ হাজার টাকা না দিলে এই মামলায় আসামী করে চালান দিবে বলে হুমকি দেয় উপায় না দেখে টাকা দিয়ে মুক্ত হয়ে আসি থানা থেকে। এই ঘটনা শুনার পর ভাবতে থাকি আমাদের এতো টাকা দেওয়ার তৌফিক নাই, তাই এই ভয়ে আজ আমরা বাড়ী ছাড়া।
এরপর আমার ভাই মোঃ ফারজুল মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে এস.আই জিকরুল ইসলাম এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ফোন করে বলেন টাকা ও দিতে হবে এবং আমাদের কথা মতো স্বাক্ষীও দিতে হবে না হয় মামলায় আসামী করবেন। তারপর থানার দালাল সোর্স মুজিবুর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বার হতে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে ফোন করে বলে ৫০ হাজার টাকা দিলে আর পুলিশের কথা মতো স্বাক্ষী দিলে আসামী হতে হবে না। দালাল মুজিবুর এই মামলায় আসামীগনের হয়ে কাজ করছেন।
পরবর্তীতে ০১/০৬/২০২২ ইং তারিখে আনুমানিক বেলা ৫ ঘটিকার সময় খালিয়াজুড়ী থানার ওসি সাহেব এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে আমার মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে বিষয়টি অবগত করিলে উনিও বলেন মামলার আইও এস.আই জিকরুল ইসলাম ও মুজিবুরের কথা মতো কাজ করার জন্য।
অভিযোগের ব্যাপারে দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া থেকে নেত্রকোনা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সি’র সাথে যোগাযোগ করিলে তিনি বলেন অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপারে দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া থেকে খালিয়াজুড়ী থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করিলে তিনি ৭০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা লেনদেন এর বিষয়টি অবগত নন বলে জনান।
পরবর্তীতে এস আই জিকরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করিলে তিনি ঘুষ লেনদেন এর বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। এস আই জিকরুল এর বিরুদ্ধে থানা এলাকাবাসীর একাধিক অভিযোগ থাকলেও পুলিশ সদস্য হওয়ায় ভয়ে মানুষ তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে রাজি নয়। অনুসন্ধানে জানা যায় মামলার আসামীগনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পকেটে নিয়ে মামলার মোড় ঘুরানো চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন এস আই জিকরুল এবং এই মামলায় লাগাম ছাড়া ঘুষ বানিজ্য চলছে । এস আই জিকরুল এর কাছে এই মামালায় সন্দেহ ভাজন আসামী কিছু বিত্তশালী ও নিরীহ লোকেরাই।
Development by: webnewsdesign.com