মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চার চা শ্রমিককে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ঘাতক। এ ঘটনা ঘটেছে রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ভোর আনুমানিক সাড়ে পাঁচটায় সীমান্তবর্তী পাল্লাতল চা বাগানে। এতে আহত কানন বক্তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় পালিয়ে যাওয়া ঘাতকের সৎ মেয়ে চন্দনা বুনাজি (১০) প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পুলিশ, চা বাগানসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোরে কথা কাটাকাটির জের ধরে নির্মল কর্মকার ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে স্ত্রী জলি বুনাজি (৩৩) ও শ্বাশুড়ি লক্ষী বুনাজিকে (৬০) খুন করে। ঘাতকের সৎ মেয়ে চন্দনা বুনাজি দৌড়ে গিয়ে বাগানের সবাইকে ঘটনাটি জানালে বাগানের চা শ্রমিকরা বাড়ি ঘিরে ফেলে। সে সময় সময় পাশের ঘরের বসন্ত বক্তা (৬০), তার স্ত্রী কানন বক্তা (২৭) ও মেয়ে শিউলি বক্তা (১৩) এগিয়ে এলে তাদেরকে ও ধারালো দা দিয়ে নির্মল এলোপাতাড়ি কোপায়।
ঘটনাস্থলে বসন্ত বক্তা ও শিউলি বক্তা মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় কানন বক্তাকে অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা ও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এ সময় বাগানের শ্রমিকরা বাড়ি ঘেরাও করে ফেললে ঘাতক নির্মল কর্মকার ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ, জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পিবিআই, সিআইডির পৃথক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, ঘাতক নির্মল কর্মকার দেড় বছর আগে জলি বুনাজিকে তার এক কন্যাসহ বিয়ে করে।
ঘটনার সময় পালিয়ে বেঁচে যাওয়া চন্দনা বুনাজি বলে, ‘হঠাৎ দেখি আমার সৎ বাবা আমার মাকে দা দিয়ে কোপাচ্ছে। আমি এগিয়ে এসে বাধা দিলে আমাকেও বেধড়ক মারধর করে। ততক্ষণে আমার মা, নানিসহ আরও দু’জনকে খুন করে ফেলে সৎ বাবা নির্মল কর্মকার। আমি তখন দৌড়ে পালিয়ে চিৎকার করে ঘটনাটি বলি।’
তবে কী কারনে এ ঘটনাটি ঘটেছে সে বলতে পারেনি।
বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন জানান, ঘাতক নির্মল কর্মকার দেড় বছর আগে জলি বুনাজিকে বিয়ে করে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিল। সে আমার বাগানের কোনো চা শ্রমিক না। এর আগে সে পাশ্ববর্তী আল্লাদাদ চা বাগানে ছিল।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় চা শ্রমিকদের শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Development by: webnewsdesign.com