মোদিজি কেন প্রতিবছর সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করেন?

রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২০ | ৭:৩৪ অপরাহ্ণ

মোদিজি কেন প্রতিবছর সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করেন?
apps

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রতিবছর জয়সালমারে সেনাদের নিয়ে দিওয়ালি উদযাপন করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অন্যান্য বছর দিওয়ালির খুশি যেমন ছিল, এবছর প্রধান দুটি কারণে তা ছিল না। এক, গত শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের গুরেজ ও উরি সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে পাঁচ ভারতীয় সেনাসহ ছয় বেসামরিক নাগরিক নিহতের ঘটনা। দুই, করোনাভাইরাস সংক্রমণ।

গতকাল শনিবার ভারতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পালন করছেন দিওয়ালি। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিও জয়সালমারে সেনাদের নিয়ে দিওয়ালি উদযাপন করেছেন। দিওয়ালি পালনের আগে সেনা সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি। ভূমিকা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অনেকে অবাক হন মোদিজি কেন প্রতিবছর সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করেন। কিন্তু এটি এমন উৎসব, যেখানে আপনারা সবাই নিজের পরিবার পরিজন ও আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে উদযাপন করেন। আমি মনে করি, আপনারা আমার নিজের পরিবার। আমি আপনাদের জন্য মিষ্টি নিয়ে এসেছি। তবে এগুলো শুধুই আমার পক্ষ থেকে নয়। এটি ১৩০ কোটি ভারতীয়দের পক্ষ থেকে।’ মোদি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের নিরপরাধ নাগরিকদের ওপর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা সেই সময় ছিল যখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের নিরপরাধ নাগরিকদের ওপর অত্যাচার করছিল, জুলুম করছিল, নরসংহার করছিল। মা-বোনেদের উপর অমানুষিক অত্যাচার করছিল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর এই কুকীর্তি, সারা পৃথিবীতে পাকিস্তানের ঘৃণিত চেহারার মুখোশ খুলে দিয়েছিল।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘পাকিস্তানের ভয়ঙ্কর রূপ বিশ্বের সামনে প্রকাশ পাচ্ছিল। এইসব কিছু থেকে বিশ্বের নজর সরানোর জন্য পাকিস্তান আমাদের দেশের পশ্চিম সীমান্তে হামলা করে। পাকিস্তান ভেবেছিল ভারতের পশ্চিম সীমান্তে হামলা করে বিশ্বকে ভারত এই করেছে, সেই করেছে বলে কান্না জুড়ে দেবে, আর তাতে বাংলাদেশের সমস্ত পাপ ধুয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের সৈনিকরা তাদেরকে যে উপযুক্ত জবাব দিয়েছিল, তাতে পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যখন ১৯৭১ সালের যুদ্ধের এবং লঙ্গেওয়ালার যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি হতে চলেছে, কয়েক সপ্তাহ পরেই আমরা এর ৫০ বছর, এই গৌরবপূর্ণ সোনালী পৃষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করব। সেই প্রেক্ষিতে আজ আমার এখানে আসার ইচ্ছে হয়েছে। গোটা দেশ এই বীরেদের বিজয়গাঁথা শুনে নিজেদের গৌরবান্বিত অনুভব করবেন, তাদের সাহস বাড়বে, নতুন এবং আগামী প্রজন্ম এই পরাক্রম থেকে প্রেরণা নেয়ার জন্য এটি তাদের জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দেবে।’সীমান্তে ভারতকে কেউ পরীক্ষা করতে চাইলে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উত্তর জম্মু ও কাশ্মীরে সংঘর্ষে নিহত ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি সীমান্তে এ হুঁশিয়ারি বার্তা দেন।

অনুষ্ঠানে সীমান্তে রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে সকল ভারতীয়দের প্রতি আহ্বান জানান মোদি। এর আগে গতকাল জম্মু-কাশ্মীরের গুরেজ ও উরি সেক্টরে যুদ্ববিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে পাঁচ ভারতীয় সেনাসহ ছয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এ ঘটনার পরই আজ শনিবার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন নরেন্দ্র মোদি।

Development by: webnewsdesign.com