মাধবপুরে লাউ চাষে লাভবান কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া

শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১ | ৪:৪৪ অপরাহ্ণ

মাধবপুরে লাউ চাষে লাভবান কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া
apps

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পুর্ব মাধবপুর গ্রামের কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া, তিনি এ বছর প্রায় ৪৮ শতক জমিতে উন্নতজাতের লাউ চাষ করেছেন। চাষে ব্যবহার করেছেন গোবর ও অল্প পরিমাণে সার। বীজ রোপণের দেড় মাস পর থেকে গাছে গাছে ফুল আসে।

এর কিছু দিন পর থেকে শহীদের ক্ষেতে গাছে গাছে লাউ শোভা পায়। সরেজমিনে গিয়ে সাক্ষাতকালে কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া জানান, বিষমুক্ত চাষাবাদে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। শুরু থেকে এ পর্যন্ত লাউ বিক্রি থেকে পেয়েছেন প্রায় ৪২ হাজার টাকা। বাকি সময়ে আরও ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আসবে বলে ওই কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া আশাবাদী।

শুরু থেকে এ পর্যন্ত লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। তার ক্ষেতে লাউয়ের বাম্পার ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়েছেন। তারাও জমি আবাদ করে লাউ চাষ করছেন। এলাকার কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, আদাঐর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে বিভিন্ন ক্ষেতের ব্যাপকভাবে সবজি চাষ হচ্ছে। আমিও লাউ চাষ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। শুধু মোঃ রুমরাজ মিয়া নয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরাও লাউ চাষ করে লাভবান।

মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাঃ এএইচএম ইশতিয়াক মামুন বলেন, লাউয়ের ৯৫ শতাংশই পানি। ফলে নিয়মিত লাউ খেলে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়। লাউ রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। লাউয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা হার্টের জন্য উপকারী। জন্ডিস ও কিডনির সমস্যায়ও খেতে পারেন লাউ লাউয়ে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি ও প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে এটি ওজন কমাতে ও সাহায্য করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী সবজি লাউ।

এতে রয়েছে দ্রবণীয়, অদ্রবণীয় ফাইবার ও পানি। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে। লাউ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। লাউ পাতার তরকারি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে, ঘুমে সমস্যার সমাধান করে ও দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। ইউরিন ইনফেকশনে খুব উপকারী লাউ। তাই ব্যাপক পরিমাণে লাউ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে।

মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন হাসান বলেন, তেমন ঝুঁকি না থাকায় মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লাউ চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের উৎসাহ পেয়ে কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ কারণে মাধবপুর বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে লাউ। এটি শীতের সবজি হলেও এখন সারা বছরই ফলে। এই সবজি পুষ্টিগুণে ভরপুর। চিংড়ি দিয়ে লাউ বেশ সুস্বাধু। ডাল দিয়েও খাওয়া যায় এই সবজি। আবার অনেকে টাকি মাছ দিয়ে খান। লাউয়ের খোসা শুটকি দিয়ে খাওয়া যায়। যেভাবেই খান না কেন, লাউ শরীরের জন্য বেশ উপকারী, পুষ্টিগুণে ভরপুর লাউ চাষ করে কৃষক মোঃ রুমরাজ মিয়া।

সাংবাদিক লিটন পাঠানকে বলেন, এ কারণে ভালো লাগছে আদিপেশা কৃষির প্রতি টান এবং মাটির প্রতি মমতা থেকেই হয়তো আগ্রহটা তৈরি হয়েছে। লাউ চাষের সুবিধাটা হলো গাছে লাউ না ধরলেও খুব একটা মনোকষ্ট থাকে না। যদি ঠিক মতো লাউ গাছটি বেড়ে উঠে তাতেই লাভ। কারণ লাউ গাছের লতা-পাতা শুধু বাঙালিদের কাছেই নয় পৃথিবীর সর্বত্র সুস্বাদু আনাজ হিসেবে বিবেচিত এবং সমাদৃত। আমিও দেখেছি লন্ডনে প্রবাসীদের অনেকেই লাউ থেকে লাউ এর পাতা-লতা অনেক বেশি পছন্দ করেন।

লাউ এমন একটি আনাজ যার কোনো কিছুই ফেলনা নয়। গাছ থেকে সদ্যকাটা তরতাজা লাউ দিয়ে চিংড়ি বা শোল মাছের কারি এক অনন্য আস্বাদন! লাউয়ের দানা, খোসা এবং পাতা দিয়ে তৈরি করা যায় তিন পদের লোভনীয় ভর্তা।ৎচিংড়ি দিয়ে পাতা-লতার ঝোল কার না পছন্দের? বার্মা, চায়না এবং ভিয়েতনাম সহ অনেক দেশেই চিংড়ি দিয়ে লাউ পাতার সুপ বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া লাউ দিয়ে মিষ্টি জাতীয় সুস্বাদু পিঠাও তৈরি করা যায়।

Development by: webnewsdesign.com