“ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের মূলহোতা হিমু আটক”

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৯:৩০ অপরাহ্ণ

“ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের মূলহোতা হিমু আটক”
apps

ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের মূলহোতা শেখ আমিনুর রহমান হিমুকে এনএসআই এবং র‌্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর বনানী থেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে ২টি লোডেড ম্যাগজিন ও একটি পিস্তল ও ৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শেখ আমিনুর রহমান হিমু ব্রুনাইয়ে মানবপাচার করে আসছিল। দেশের সাধারণ মানুষকে উন্নত জীবনের আশা দেখিয়ে ব্রুনাইয়ে নিয়ে যেতেন তিনি। পরে সেখানে তিনি তাদের প্রতিশ্রুত চাকরি দিতেন না। এভাবে তিনি প্রায় ৪০০ মানুষকে ঠকিয়ে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন।

সম্প্রতি ঋণ ও জমিজমা বিক্রি করে ব্রুনাইয়ে যাওয়ার টাকা দিয়েছিলেন ৬০ জন। উদ্দেশ্য বিদেশ গিয়ে ভাগ্য ফেরাবেন। কিন্তু ব্রুনাই গিয়ে কোনো কাজ না পেয়ে উল্টো মানবেতর জীবন-যাপন শুরু হয়। বাধ্য হয়ে নিজ খরচে দেশে ফিরতে হয় তাদের।
পরে জানা যায় ২০১৯ সালে ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের মূল হোতা মেহেদী হাসান বিজনের কোম্পানির নামে ভুয়া ডিমান্ড লেটার সংগ্রহ করে ৬০ জনকে ব্রুনাইয়ে পাঠায় শেখ আমিনুর রহমান হিমু (৫৫)। অথচ তার নিজের কোনো রিক্রুটিং লাইসেন্স নেই, হিমু নজরুল ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ও হাইওয়ে ইন্টারন্যাশনাল আরএল ব্যবহার করে ব্রুনাইয়ে মানবপাচার করেন।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র‌্যাব কার্যালয়ে এসব কথা জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রাকিবুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। এর আগে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাফরুল থেকে এনএসআই ও র‌্যাবের অভিযানে মানবপাচারকারী শেখ আমিনুর রহমান হিমু ও তার সহযোগী মো. নুর আলম (৩৬) ও বাবলুর রহমানকে (৩০) গ্রেফতার করে র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রাকিবুল হাসান বলেন, ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের ঘটনায় অসংখ্য ভুক্তভোগী র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার হিমু স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিচয় দিতেন। এ পরিচয়ে তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেকার যুবকদের টার্গেট করে ব্রুনাইয়ে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাতেন। ব্রুনাইয়ে চাকরির কথা বলে প্রতিজনের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকা নিতেন। কিন্তু ব্রুনাইয়ে কোনো চাকরি না পেয়ে উল্টো জেল খেটে দেশে ফিরতেন প্রবাসীরা।

র‌্যাব-৩ এর সিও রাকিব বলেন, বাংলাদেশি দালাল এ হিমু ব্রুনাইয়ে ভালো ভালো কোম্পানির কথা বলে মানবপাচার করতেন। কিন্তু ব্রুনাইতে সেসব কোম্পানির কোনো খোঁজ মেলেনি।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা ও নির্যাতনসহ বহুমুখী অপরাধ প্রবণতার কারণে ব্রুনাইয়ে সক্রিয় ভিসা দালাল চক্রের মূল হোতা মেহেদী হাসান বিজনসহ সাতজনের পাসপোর্ট বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায়। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পাসপোর্ট অধিদফতর মেহেদী হাসান বিজনসহ সাতজনের পাসপোর্ট বাতিল করে।

Development by: webnewsdesign.com