ব্যবসায় হালাল-বাণিজ্যের পাঁচ পদ্ধতি

বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২ | ১:০২ অপরাহ্ণ

ব্যবসায় হালাল-বাণিজ্যের পাঁচ পদ্ধতি
apps

নিম্নোক্ত পাঁচটি পদ্ধতিতে ব্যবসা করলে তা হালাল হিসেবে ইসলামী শরিয়ত কর্তৃক অনুমোদিত।

. বায়উ মুরাবাহ : লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে নগদ মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের একক ব্যবসা।

. বায়উ মুয়াজ্জাল : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোনো সময়ে একসঙ্গে অথবা কিস্তিতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে ক্রয়-বিক্রয়।

. বায়উস সালাম : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোনো সময়ে সরবরাহের শর্তে এবং তাত্ক্ষণিক উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইসলামী শরিয়ত অনুমোদিত পণ্য সামগ্রীর অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় এলেন তখন লোকেরা (ফল-ফসলের জন্য) অগ্রিমমূল্য প্রদান করত। তখন রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অগ্রিম মূল্য প্রদান করবে সে যেন তা সুনির্দিষ্ট মাপের পাত্রের দ্বারা ও সুনির্দিষ্ট ওজনে প্রদান করে। ’ (বুখারি, হাদিস : ২২৩৯)
. বায়উ মুজারাবা : একপক্ষের মূলধন এবং অন্যপক্ষের দৈহিক ও বুদ্ধিভিত্তিক শ্রমের সমন্বয়ে যৌথ ব্যবসা। [আল-জাজায়রি, কিতাবুল ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আরবাআহ (বৈরুত : দারুল ইলামিয়্যাহ, তা.বি), ৩/৩৪]

এ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ তাদের মধ্যে চুক্তিহারে বণ্টিত হবে। রাসুলুল্লাহ খাদিজা (রা.)-এর মূলধন দ্বারা এরূপ যৌথ ব্যবসা করেছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম অনেকেই এ পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। [ইমাম শামসুদ্দিন আস-সারাখসি, আল-মাবসুত (বৈরুত : দারুল মারিফাহ, ১৪১৪ হি/১৯৯৩ ইং), ২২/১৮]

মুজারাবায় যে ব্যক্তি পুঁজির জোগান দেয় তাকে সাহিবুল মাল বা রাব্বুল মাল এবং শ্রমদানকারী তথা ব্যবসা পরিচালককে মুজারিব বা উদ্যোক্তা বলা হয়। এখানে সাহিবুল মালের পুঁজি হচ্ছে ব্যবসায় প্রদত্ত অর্থ-সম্পদ আর মুজারিবের পুঁজি হচ্ছে দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রম।

মুজারাবা কারবারে লাভ হলে ব্যবসায় শুরুতে কৃত চুক্তির শর্তানুসারে সাহিবুল মাল এবং মুজারিব উভয়েই ওই লাভ ভাগ করে নেয়। পক্ষান্তরে ব্যবসায় লোকসান হলে সম্পূর্ণ লোকসান কেবল সাহিবুল মাল তথা পুঁজি বিনিয়োগকারীকেই বহন করতে হয়। আর এ ক্ষেত্রে মুজারিবের ব্যয়িত শ্রম, বুদ্ধি ও সময় বৃথা যায়। মুজারিব কোনো লাভ পায় না—এটাই তার লোকসান। তবে ব্যবসা পরিচালনায় মুজারিবের অবহেলা কিংবা চুক্তির শর্ত ভঙ্গের কারণে লোকসান হলে সে ক্ষেত্রে লোকসানের দায়ভার মুজারিবকেই বহন করতে হবে। কেননা এ ক্ষেত্রে পুঁজির মালিকের কোনো ভূমিকা থাকে না। [আলী আল-খাফিফ, আশ-শিরকাতু ফি ফিকহিল ইসলামী (কায়রো : দারুন নশর, ১৯৬২ ইং), ৭৪]

. বায়উ মুশারাকা : মূলধন ও লভ্যাংশের ব্যাপারে দুই বা ততোধিক অংশীদারের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে ব্যবসা। [সাদী আবু হাবিব, আল-কামুসুল ফিকহ (পকিস্তান : ইদারাতুল কোরআন ওয়াল উলুমিল ইসলামিয়্যাহ, তাবি), ১৯৫]

মুশারাকা পদ্ধতিতে ব্যবসায় লাভ হলে অংশীদাররা পূর্ব নির্ধারিত অনুপাতে তা ভাগ করে নেয়। আর লোকসান হলে অংশীদাররা নিজ নিজ পুঁজির আনুপাতিক হারে তা বহন করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩৬)

Development by: webnewsdesign.com