বিদ্যুৎ উৎপাদনেও গ্রামে লোডশেডিং

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

বিদ্যুৎ উৎপাদনেও গ্রামে লোডশেডিং
বিদ্যুৎ উৎপাদনেও গ্রামে লোডশেডিং
apps

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। ক্রমবর্ধমান এই চাহিদা পূরণের চেষ্টায় রেকর্ড হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। এর পরও ঢাকার বাইরের জেলা-উপজেলা শহরসহ গ্রামাঞ্চলে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ভাপসা গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলে ব্যাহত হচ্ছে শেষ মুহূর্তের সেচ কার্যক্রম। কৃষকের সেচ কার্যক্রম ঠিক রাখতে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে গ্রামাঞ্চলের লোডশেডিং পরিস্থিতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে রাজধানীতে লোডশেডিং কম। গত সোমবার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদনের রেকর্ড করে।

এটিই এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন। কিন্তু ওই রেকর্ডের দিনেও সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল প্রায় ১৭ হাজার মেগাওয়াট, যা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। বিপিডিবির সদস্য (বিতরণ) মো. রেজাউল করিম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকার বাইরে যেসব অঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে, সেসব এলাকা আমরা চিহ্নিত করছি। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে যেন কৃষকের সেচ কার্যক্রম ব্যাহত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

প্রয়োজনে রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে কিছুটা লোডশেডিং করেও গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই গ্রামাঞ্চলের লোডশেডিং পরিস্থিতি কিছুটা কমে আসবে।’ এদিকে রাজধানীতে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দুই প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসি ও ডেসকো। লোডশেডিং না হলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে কিছু কিছু এলাকায় স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎবিভ্রাট হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের জোনভিত্তিক বিদ্যুৎ চাহিদা ও সরবরাহের তথ্যে দেখা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে এই বিতরণ কম্পানিকে এক হাজার ৭৪৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে। এই সময় সারা দেশে কম্পানিটির বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল আট হাজার ৮৯৬ মেগাওয়াট, সরবরাহ করেছে সাত হাজার ১৫২ মেগাওয়াট। গতকাল আরইবির বিতরণ এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয়েছে ময়মনসিংহ অঞ্চলে।
মুক্তাগাছার বাসিন্দা নকুল চন্দ্র দে পাপ্পু বলেন, ‘তীব্র গরমের মধ্যে রাতের বেলাও ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। শিশু ও অসুস্থ বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে আছেন।’

হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক সায়েম বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে আমাদের যে পরিমাণ উপকেন্দ্র ও মেশিনারিজ প্রয়োজন, তা আমাদের নেই। বিভিন্ন এলাকায় উপকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান, সেগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে বিদ্যুতের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’ কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের বাসিন্দা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখলাম দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর পরও কেন গ্রামের মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে না।’ [প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র ফেনী, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) ও চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি]

Development by: webnewsdesign.com