বাউফলে বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে অসন্তোষ

শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৪:১৬ অপরাহ্ণ

বাউফলে বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে অসন্তোষ
apps

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। বাউফলের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদারকে আহবায়ক কমিটিতে সম্মানজনক পদ না দেয়ায় তার অনুসারি নেতাকর্মীদের মধ্যে ওই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

সূত্র জানায়, গত বছরের ২৩ নভেম্বর মো. শাহজাদা মিয়াকে আহবায়ক ও মো. অলিয়ার রহমানকে সদস্য সচিব করে উপজেলা বিএনপি এব মো. হুমায়ন কবিরকে আহবায়ক ও মো. মিজানুর রহমান খোকনকে সদস্য সচিব করে পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ২০০১-২০০৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে শহিদুল আলম তালুকদার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২৩ নভেম্বর গঠিত আহবায়ক কমিটিতে সাবেক ওই এমপি শহিদুল আলমকে পৌর বিএনপির সদস্য হিসেবে রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদার দলীয় মহাসচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালে গত বছরের ১ ডিসেম্বর আহবায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়। এরপর সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না দিয়েই প্রায় ৩ মাস পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এরপর থেকেই সাবেক এমপি শহিদুল আলমের সমর্থকরা অসন্তোষে ভূঁপে ওঠেন।

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শাহীন রেজা বলেন, উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক মো. শাহজাদা মিয়া ১৫ আগষ্ট গরু জবাই করে শোক দিবস পালন করেছিলেন। তিনি শাররীকভাবে অসুস্থ। ২০০৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে এবং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে তিনি কাজ করেছেন। তার ভাতিজা মো. জিয়াউল হক জুয়েল পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সম্প্রতি নৌকা প্রতিক নিয়ে বাউফল পৌর সভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার ভাগ্নে মো. ইব্রাহিম ফারুক পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়াও আহবায়ক কমিটিতে যাদের নাম রয়েছে তাদের অনেকেই ঢাকায় থাকেন।

শাহীন রেজা আরও বলেন, শহিদুল আলম তালুকদারের নেতৃত্ব ছাড়া বাউফল উপজেলা বিএনপি কল্পণা করা যায় না। তাকে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে না রেখে পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে। এতে ষ্পষ্ট যে, দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র বাউফল উপজেলা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে চায়না। তিনি বলেন, পৌর আহবায়ক কমিটিতে পৌরসভার একজন কাউন্সিলরের অধীনে সাবেক এমপির নাম থাকা কতটা হাস্যকর এবং নিন্দনিয় সেটা কেন্দ্রীয় কমিটি অনুদাবন করেননি। সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদারকে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক করা না হলে দলকে গতিশীল করা সম্ভব নয়। যারা দলকে গতিশীল করতে চায়না তারাই শহিদুল আলমকে পেছনে টেনে রাখতে চান।

বিষয়টি সম্পর্কে বাউফল পৌর বিএনপির আহবায়ক ও বাউফল পৌরসভার কাউন্সিলর হুমায়ন কবির বলেন, সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদার জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিপক্ষে কাজ করেছেন। বিভিন্ন সময় দলের সঙ্গে বেঈমানী করা এই নেতার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অবহিত আছেন। শহিদুল আলমের হাতে দল নিরাপদ নায় সেটা বুঝেই তাকে পদ-পদবী দেয়া হয়েছে।

আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম সৈয়দ আহমেদ মিয়ার ছেলে সামুয়েল আহমেদ লেনিন বলেন, আহবায়ক কমিটিতে কে কি পদ পেল সেটা মুখ্য বিষয় নয়। এই মুহুর্তে বিষয়টি নিয়ে মান অভিমান বা সংক্ষুব্ধ হওয়ার কোন কারণ দেখিনা। আগামি ৬০ দিনের মধ্যে সকল ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে সকল পর্যায়ের ত্যাগী ও যোগ্য নেতৃত্বের যথাযথ মূল্যায়নণ করা হবে। দলকে গতিশীল করতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সু চিকিৎসা ও তার মুক্তির দাবিতে প্রত্যেক সদস্যকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

 

 

Development by: webnewsdesign.com