ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ

শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০ | ৫:১৩ অপরাহ্ণ

ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ
apps

ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। ফুঁসে উঠেছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীতেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে প্রতিদিন। শুক্রবারও শাহবাগে মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে।

সারা দেশে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ এনে এই মহাসমাবেশ ডেকেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপসারণের দাবিতে এই মহাসমাবেশ ডাকে তারা।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। মহাসমাবেশের শুরুতেই ধর্ষণবিরোধী মিছিল, বক্তব্য, গান, কবিতা ও স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শাহবাগ। এতে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকে এসে যোগ দিয়েছেন। এ সময় তাদের নানা স্লোগান সংবলিত প্লেকার্ড হাতে নিয়ে সমাবেশে আসতে দেখা গেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ওই বাম ছাত্র সংগঠনটি। ওইদিই শুক্রবারের মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এতে সব শ্রেণির মানুষকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সর্বত্রয়। শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণ, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার তীব্র দাবি উঠেছে সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও জনগণের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে সমর্থন জানিয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এদের ছোটখাটো লঘু দণ্ড দিয়ে লাভ নেই। সর্বোচ্চ বিচারের যে দাবি উঠেছে, আমার মনে হয় এটা অযৌক্তিক নয়। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনকে আপসহীন মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী যুগান্তরকে বলেন, বর্তমান আইনে ধর্ষণের সাজায় পরিবর্তন এনে তা মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। এ সম্পর্কিত একটি সংশোধিত আইনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে। আগামী সোমবার এই প্রস্তাব উত্থাপিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে সরকার। কেননা জনগণের পক্ষ থেকে এ দাবি উঠেছে। যেহেতু জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, সেহেতু এটি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। কারণ আইন মানুষের জন্য।

বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। এর পাশাপাশি দুই ক্ষেত্রেই অর্থ দণ্ডের বিধান আছে।

Development by: webnewsdesign.com