ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: জবি শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি গঠন

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০ | ২:১৪ অপরাহ্ণ

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: জবি শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি গঠন
apps

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তিথি সরকারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’-এ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে কটুক্তি করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের নোটিশও দেয়া হয়েছে এবং কেনো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা লিখিতভাবে আগামী ১০ (দশ) দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রার দপ্তর বরাবর জানানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) উপাচার্য মহোদয়ের আদেশক্রমে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত দুইটি পৃথক পৃথক অফিস আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়।

তদন্ত কমিটির অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থী জনাব তিথি সরকার (Tithy Sarker), রোলঃ B-170604057, কর্তৃক ইন্টারনেট-এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’-এ ইসলাম ধর্মের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে কটুক্তি করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এর ধারা ১১(১০) এর উপাচার্য মহোদয়ের ক্ষমতাবলে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উক্ত তদন্ত কমিটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডীন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মনিরুজ্জামানকে আহবায়ক এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আবু লায়েককে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। উক্ত কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আল হেলাল উদ্দিন। কমিটিকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে উপাচার্য মহোদয়ের নিকট রিপোর্ট পেশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, তিথি সরকার দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্টের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে এমন মন্তব্য করে আসছিলেন। সেসব পোস্ট ও কমেন্টের স্ক্রিটশর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ ও ছাত্র-ছাত্রীদের পোস্টের মাধ্যমে ভাইরাল হলে সামাজিক মাধ্যমে এ বিষয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

এরপরই তিথি সরকারকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে তিথী সরকারের বহিষ্কার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিথি সরকারকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই দাবি ৭২ ঘণ্টা পূর্বেই মেনে নিয়ে তিথি সরকারকে সাময়িক বহিষ্কার করে।

অন্যদিকে, অভিযোগ ওঠার পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিথী সরকার। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে কেউ দীর্ঘদিন যাবত ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করছে বলে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আইনি সহায়তা নিয়েছেন তিনি। অভিযোগের পরপরই বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর সম্পাদক তিথী সরকারকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে।

একই সাথে তিথি সরকারকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবেনা সে বিষয়ে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্যও সংগঠন থেকে আদেশ দেয়া হয়েছে। অনেকে তিথি সরকার ছাত্র অধিকার পরিষদে যুক্ত থাকার বিষয়ে সংগঠনটির নিন্দা জানায়। এরপরই জবি ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে তিথি সরকারকে সাময়িক ভাবে বহিস্কারের বিজ্ঞপ্তি দিতে দেখা যায়। তিথি সরকার বিশ্ব হিন্দু সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্বরত রয়েছেন।

Development by: webnewsdesign.com