ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজি স্ট্যান্ড,ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ

সোমবার, ১০ জানুয়ারি ২০২২ | ৮:৩৩ অপরাহ্ণ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজি স্ট্যান্ড,ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ
apps

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নতুন ব্রিজ এবং ওলিপুরে আবারও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এছাড়া যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং আর অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। এতে মহাসড়কে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল, তৈরি হচ্ছে যানজট। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। সড়ক বিভাগ বলছে শিগগিরই এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ। একমাত্র মাধবপুর উপজেলা ছাড়া বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মানুষের সারাদেশের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই পয়েন্ট হয়ে যেতে হয়। যে কারণে প্রতিদিন এখানে কয়েকশ’ গণপরিবহণের যাত্রী উঠা নামা করে। গণপরিবহণে পাশাপাশি এখানে রয়েছে অন্তত চারটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্টে চারপাশ দখলে নিয়েছেন অবৈধ দখলদাররা।

চ্যাপ্টা ঘর বানিয়ে বসিয়েছেন বিভিন্ন খাবার হোটেল, ফল ও মুদি দোকান। কোন কোন দোকানী আবার নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো বাহিরে রাখার কারণে দূর্ভোগ বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। এছাড়া এই পয়েন্টে রয়েছে চারটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। যেখানে প্রতিদিন কয়েকশ’ অটোরিকশা যাত্রী ওঠানামা করে এবং পার্কিং করে রাখে।

অপরদিকে, ওলিপুর পয়েন্টের অবস্থাও একই। সেখানে গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিকরা সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। এ সুযোগে ওলিপুর হয়ে ওঠেছে একটি পরিপূর্ণ আবাসিক এলাকা। এত বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য সেখানে নির্দিষ্ট কোন বাজার না থাকায় মহাসড়কের দুইপাশ দখল করে বসছে অস্থায়ী বাজার। ছোট ছোট চ্যাপ্টা ঘর নির্মাণ করে দোকানপাট বসিয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক ব্যক্তি। পাশাপাশি গড়ে উঠেছে সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়ির স্ট্যান্ড।

সকালে শ্রমিকদের কারখানায় যাওয়া এবং বিকেলে ফেরার সময় ওই স্থানে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় শ্রমিকদের। যানজটের কারণে ঠিক সময় কারখানায় পৌঁছতে না পারছেন না অনেক শ্রমিক।

হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিক আল আমিন বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে শতশত সিএনজি দাড়িয়ে থাকে। এছাড়া কোম্পানির গাড়িসহ আর বিভিন্ন গাড়ি চলাচলের কারণে সকাল-বিকাল এখানে যানজট লেগে থাকে। এতে আমাদের অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই দ্রুত এসব অবৈধ গাড়ির স্ট্যান্ড এখান থেকে উচ্ছেদ করা দরকার।

স্থানীয় বাসিন্দা মঈনুল হক বলেন, ‘সড়ক বিভাগ এর আগেও দুইবার উচ্ছেদ করছে। কিন্তু কিছুদিন গেলেই আবারও অবৈধ দোকানপাট বসে যায়। তাই সরকারকে আর কঠোর হওয়া উচিৎ, যেন একবার উচ্ছেদের পর আবার নতুন করে কেউ বসতে না পারে। প্রয়োজনে এখানে একটি স্থায়ী বাজার নির্মাণ করে দেয়া হোক।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘এর আগেও আমরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। কিন্তু নতুন করে আবারও সেই জায়গাগুলো দখল হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে নতুন করে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চালানোর জন্য জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা চলছে। অচিরেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এ ব্যাপারে অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হবে। তাহলেই আর কেউ নতুন করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না।’

Development by: webnewsdesign.com