টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পর সাগরে জেলেদের মাছ ধরা শুরু 

সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬:২৮ অপরাহ্ণ

টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পর সাগরে জেলেদের মাছ ধরা শুরু 
apps

টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া শুরু করেছেন জেলেরা। সাগরে যাওয়ার আগে তাই জাল, দড়ি, মাঝি-মাল্লা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে প্রস্তত হয়ে গতকাল মধ্যরাত থেকে সাগরে যাওয়া শুরু করেছেন জেলেরা।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস অবতরন কেন্দ্রের মাছধরার ট্রলারগুলো সাগরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

টানা ২২ দিন পর গতকাল মধ্যরাতেই পাথরঘাটার জেলেরা সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। এতে স্বস্তি ফিরেছে জেলে পরিবারগুলোতে।গতকাল সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় জেলেরা। কেউ জাল-দড়ি ট্রলারে তুলছেন, কেউ জ্বালাতি তেল সরবারহ করছেন। কেউ আবার ট্রলার ধুয়েমুছে পরিষ্কার করছেন। এনিয়ে এক আনন্দ মূখর দৃশ্য তৈরী হয়েছে পাথরঘাটা মৎস অবতরন কেন্দ্রের ট্রলার ঘাটে।

২২ দিন সাগরে যেতে না পারায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন তালিকা অনুযায়ী বরগুনায় ৩৭ হাজার ৭৪ জন জেলেকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এখন নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাগরে যাত্রা শুরু করছেন তারা। সমুদ্রে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত পরিমানে ইলিশ ধরা পড়বে এমনটা আশা ট্রলার মালিক ও জেলেসহ সবার।

জেলে বাবুল হাওলাদার বলেন, এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাগরে যেতে পারিনি। অভাব অনটনের মধ্যে কোনভাবে বেঁচে ছিলাম। ২০ কেজি চাল পেয়েছি, তবে শুধু চাল খেয়ে তো আর বেঁচে থাকা যায়না। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলো। সাগরে যাচ্ছি। বেশ খুশি লাগছে।

ট্রলার মালিক ইকবাল হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিলেন মৎসব্যবসায়ীরা। সরকারের নির্দেশনা মানতে একয়দিনে আমরা সাগরে ট্রলার পাঠানো থেকে বিরত ছিলাম। তবে এটা সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি। কারণ এ নিষেধাজ্ঞায় সাগরে মাছ বেড়েছে । আশা করছি, জেলেরা এবার বেশি ইলিশ নিয়ে ফিরবে।

জেলা মৎসজিবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, কষ্ট করে হলেও নিষেধাজ্ঞার সকল নিয়ম পালন করেছে পাথরঘাটার জেলেরা। বরগুনায় মোট জেলে রয়েছে প্রায় ৭০ হাজারের মত, এর মধ্যে নিবন্ধিত ৩৭ হাজার ৭৪ জন জেলেকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। বাকি জেলেরা কেউ কোন সহায়তা পায়নি।

তবুও সবাই তাকিয়ে আছে সাগরের দিকে। সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়লেই সবার কষ্ট সফল হবে। আমাদের এখানে শতাধিক ট্রলার প্রস্তুত রয়েছে। মধ্যরাত থেকেই তারা সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। আশাকরি জেলেরা আশানুরূপ মাছ নিয়ে ফিরবে।

জেলা মৎস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলার ৩৭ হাজারেরও বেশী জেলে ৭৪১ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দেয়া হয়। আজ রাতে সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। এখন সাগরে মাছ ধরায় আর বাধা নেই। আশা করা যায় জেলেরা কাঙ্খিত ইলিশ নিয়েই তীরে ফিরতে পারবে।

ইলিশ প্রজনন বৃদ্ধিতে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাগরে ইলিশ আহরন, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার।

Development by: webnewsdesign.com