চার কিংবদন্তি ফুটবলারের হাতকড়া পরানোর কলঙ্কময় দিন..

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২:০০ অপরাহ্ণ

চার কিংবদন্তি ফুটবলারের হাতকড়া পরানোর কলঙ্কময় দিন..
apps

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে কলঙ্কময় একটি দিন ২১ সেপ্টেম্বর। ঐতিহ্যবাহী আবাহনী ক্লাব থেকে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার চার ফুটবলারকে গ্রেফতার করেছিল এদিন। ৩৮ বছর আগের এ ঘটনা নতুন প্রজন্মের কাছে অজানা হলেও এ দেশের ফুটবলের সোনালী সময়ের নায়ক তারা। একনামে যাদের চেনেন পুরো দেশ, তারা হলেন কিংবদন্তি সালাউদ্দিন, আনোয়ার, হেলাল ও চুন্নু।

১৯৮২ সাল, ঘটনার সূত্রপাত খেলার মাঠে। তখনকার সময়ে আবাহনী-মোহামেডান খেলা মানেই পুরো দেশ উত্তাল। এখনকার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কিংবা বার্সা-রিয়ালের মতোই টানটান উত্তেজনা ছড়াতো এ ম্যাচ। সে রকম একটি ফাইনাল ম্যাচ ঢাকা স্টেডিয়ামে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ দর্শক। সে ম্যাচেই ঘটে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা।

ক্রীড়া সাংবাদিক আসিফ ইকবাল সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তার ফেসবুকে লিখেন, ‘দুই জনপ্রিয় দলের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে মোহামেডান এগিয়ে যায় কোহিনুরের গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনী মরিয়া হয়ে পড়ে গোল শোধে। আনোয়ারের শট গোল লাইন থেকে ধরে ফেলেন সাদা কালো শিবিরের গোলরক্ষক মহসিন। কিন্তু আবাহনীর দাবি বল গোল লাইন অতিক্রম করেছিল। আনোয়ার ও হেলাল গোলের দাবি জানান রেফারি আব্দুল আজিজের কাছে। রেফারি আজিজ লাইন্সম্যান মহিউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করে আবাহনীর দাবি নাকচ করে দেন। গোল না দেওয়ায় আবাহনীর ফুটবলাররা চড়াও হন লাইন্সম্যানের ওপর।

এরপর তুঘলকি কাণ্ড স্টেডিয়ামজুড়ে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় স্টেডিয়ামসহ আশপাশের এলাকা। মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। দর্শককে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রেফারি ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজান। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন-বাফুফে মোহামেডানকে ২-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করে।

তবে মাঠের ঘটনা মাঠে শেষ হয়নি। রাতের বেলা হঠাৎ পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবাহনী মাঠ থেকে গ্রেফতার করে কিংবদন্তি চার ফুটবলার সালাউদ্দিন, আনোয়ার, হেলাল ও চুন্নুকে। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার দুই ফুটবলার পাকির আলী ও রবীন্দ্র আশোকাকে। তবে দূতাবাসের হস্তক্ষেপে বিদেশি ফুটবলারদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেও আটকে রাখা হয় দেশি ফুটবলারদের। অভিযোগ খেলার মাঠে মারামারিতে উস্কানি দেয়ার। জরুরি সামরিক আদালতে দেয়া হয় তাদের কারাদণ্ড।

তবে বেশি দিন তাদের আটকে রাখতে পারেনি সামরিক সরকার। দেশের ক্রীড়াপ্রেমিদের চাপে ১৭ দিন পর তাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সরকার। তবে ইতিহাসের পাতায় থেকে যায় এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের নাম।

Development by: webnewsdesign.com