গায়ক আকবর এখন ক্র্যাচ ছাড়া অচল

বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

গায়ক আকবর এখন ক্র্যাচ ছাড়া অচল
apps

১৯ বছর আগে সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে গান গাওয়ার সুযোগ। সেখানে কিশোর কুমারের নন্দিত “একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে” গানটি গেয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। এরপর জীবনের মোড়ই ঘুরে গেল এককালের রিকশাচালক আকবরের। এরপর “ তোমার হাত পাখার বাতাসে” গানটিও শ্রোতাদের আকর্ষণে সক্ষম হয়। বিনোদন ভুবনে আকবরের আগমন হয়েছিল এভাবেই- এলাম, দেখালাম, জয় করলাম।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তিন চাকার চালক থেকে গায়ক হওয়া সেই আকবর আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক দিন আগেই তার শরীরে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন অসুখ। চিকিৎসার জন্য ভারতেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেলেনি মুক্তি।

এ গায়ক জানান, পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের ককসিডাইনিয়া হাড়ে আঘাত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু নার্ভ সেখানে ঢুকে যায়। ফলে পায়ের ওপর ভর দিয়ে তিনি দাঁড়াতে পারছেন না। বর্তমানে তিনি ক্র্যাচ ছাড়া একেবারেই অচল। কারও সাহায্য ছাড়া উঠতে-বসতে বা নড়তেও পারছেন না। যারাই সাম্প্রতিক সময়ে আকবরকে দেখেছেন, তারাই তার বর্তমান অবস্থা দেখে চমকে উঠেছেন।

আকবর বলেন, “বিপদ আমাকে ছাড়ছেই না। আমি চলতে পারি না। আমার মেরুদণ্ডের হাড়ের মধ্যে নার্ভ ঢুকে গেছে। এমআরআই করেছিলাম। তখন জানিয়েছিল, অপারেশনে ৭০ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে। পরে আবার শুনি, হাড়ের কী যেন পরিবর্তন করতে হবে।”

নিজের অসুস্থতার জন্য অভিনেতা ডিপজলের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এক ডাক্তার ভদ্রমহিলা জানিয়েছিলেন, অপারেশনের জন্য ৭০ হাজার টাকা লাগবে। সব মিলিয়ে ১ লাখ। সঙ্গে সঙ্গে আমি ডিপজল ভাইকে ফোন করি। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এরপর এখন শুনি মেরুদণ্ডের শেষ হাড়ে সমস্যা। ডিস্কও পরিবর্তন করতে হবে। ৪-৫ লাখ টাকার ব্যাপার। এরমধ্যে মেয়ের স্কুলের ভর্তি, সংসার খরচ, সবই করতে হচ্ছে। অথচ গত ৫ মাস আমি কোনো শো-ই করতে পারিনি।” শুধু ডিপজলই না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র পেয়েছিলেন আকবর। কিন্তু সেটি তার কাজে আসেনি।

এ গায়ক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সঞ্চয়পত্রের ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তখন জানানো হয়েছিল, ৩ বছর পর এটা আমি ভাঙাতে পারবো। বছর পূর্ণ হলেও ব্যাংক সে টাকা আমাকে দিচ্ছে না। সেটা তুলতে পারলে এখন হয়ত বাঁচতে পারতাম। হয়তো ভবিষ্যতেও বেঁচে থাকবো, তবে পঙ্গু হয়ে।”

গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। গান না শিখলেও তার ভরাট কণ্ঠের বিরাট কদর ছিল। এ কারণে বিভিন্ন স্টেজ শোয়ে তার ডাক পড়তো। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি তার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ইত্যাদি কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপরের গল্প সবারই জানা।

Development by: webnewsdesign.com