কুশাহাটা চরে নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গাছতলায় চট বিছিয়ে চলে ৩০০ শিশুর পাঠদান

বুধবার, ১২ জানুয়ারি ২০২২ | ১:৩৬ অপরাহ্ণ

কুশাহাটা চরে নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গাছতলায় চট বিছিয়ে চলে ৩০০ শিশুর পাঠদান
apps

শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রয়েছে পদ্মা নদীর দুর্গম চর কুশাহাটার শিশুরা। পদ্মার গর্ভ থেকে জেগে ওঠার পর বিগত এক যুগেও সেখানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। নেই তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধাও।
জানা গেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রত্যন্ত চর কুশাহাটা। গ্রামটি গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হতে প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর মাঝে অবস্থিত। সেখানে প্রায় ৭শ’ থেকে ৮শ’ লোকের বসবাস। যার মধ্যে বিভিন্ন বয়সী শিশুর সংখ্যা প্রায় ৩০০। পায়াকট বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা চরের শিশুদের শিক্ষার জন্য ২০১৭ সালে ‘কুশাহাটা প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে স্কুলঘর তৈরি করে দেয়। কিন্তু স্কুলঘরটি গত বছর ভেঙে পড়ে।

তারপর থেকে গাছতলায় চট বিছিয়ে কোনোমতে চলে আসছে পাঠদান কার্যক্রম। এই স্কুলে শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর বাইরেও আর্থিক অনটনের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠান না। ওই স্কুলের শিক্ষক সংখ্যা মাত্র দুজন। ওয়াজউদ্দিন সরদার ও রওশনারা বেগম। তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। নিজেদের নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা এখানকার শিশুদের ন্যূনতম শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা জানান, দরিদ্র অভিভাবকরা তাদের যা দেয় তাতে মাসে সর্বোচ্চ ৪ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা হয়। ওই দিয়েই কোনোমতে তাদের সংসার চলে। কুশাহাটা গ্রামের মাতব্বর (পঞ্চায়েত প্রধান) মো. মকবুল মণ্ডল বলেন, চরের মানুষেরা খুবই গরিব ও অসচ্ছল। পড়ালেখার সুযোগ না থাকায় চরের মেয়েদের অল্প বয়সেই অভিভাবকরা বিয়ে দিয়ে দেন। ছেলেরা মাছ ধরা, কৃষিকাজ করাসহ নানা ধরনের কাজে লেগে যায়। এখানে জরুরি ভিত্তিতে একটা সরকারি স্কুল দরকার। পায়াকট বাংলাদেশের দৌলতদিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মজিবর রহমান জুয়েল জানান, তাদের প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আর ওই স্কুলে সহায়তা করতে পারছে না। তবে সেখানকার শিশুদের বই পেতে তারা সহায়তা করে থাকেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুল হক খান বলেন, কুশাহাটা চরে স্কুল ও রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য আমি ইতিমধ্যে সচিব পর্যায়ে যোগাযোগ করেছি। আশা করি, দ্রুত ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
এ ছাড়া সোলারের মাধ্যমে চরবাসীর বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, কুশাহাটার চর গোয়ালন্দ উপজেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে অচিরেই স্কুল, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণসহ সব মৌলিক অধিকার পূরণে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে আমি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

Development by: webnewsdesign.com