করোনার থাবা এবার বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস

শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৪:৩৩ অপরাহ্ণ

করোনার থাবা এবার বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস
apps

করোনার থাবা এবার বিশ্ব পুঁজিবাজারে। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক মন্দার পর শুক্রবার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে ভয়াবহ দরপতন হয়েছে। এ নিয়ে টানা ছয় দিন বেসামাল বিশ্ব পুঁজিবাজার।আর্থিক মন্দার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহ কাটছে এ খাতে। গত ছয় দিনে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হারিয়েছে বিশ্ব পুঁজিবাজার। খবর রয়টার্স, বিবিসি। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিক মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ আর সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট দেখা দেওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো জোন। এ আতঙ্ক ভর করেছে বিনিয়োগকারীদের ওপর। যার প্রভাব গত এক সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে বিশ্ব পুঁজিবাজারে।এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে শুক্রবার বড় দরপতন হয়। যুক্তরাজ্যের প্রধান পুঁজিবাজার লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জভিত্তিক এফটিএসই ১০০ সূচকটি ৩ শতাংশ কমে যায়। জাপানের নিক্কেইতে সূচকের পতন ঘটেছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ। সিডনির এএসএক্স২০০-তে পতন হয়েছে ৩ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচক হারিয়েছে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ আর হংকংয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে সাংহাই কম্পোজিট- ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে বৃহস্পতিবার ওয়ালস্ট্রিটে প্রধান সূচক ডাও জোন্স কমে ১২০০ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। যা ২০১১ সালের আগস্টের পর সূচকটির সবচেয়ে বড় পতন। অপর সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ পয়েন্ট কমে বা ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। নাসডাক সূচক হারিয়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।ভারতে শুক্রবার সকালে এক হাজার ১৪০ পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স, অর্থাৎ ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ পড়ে ৩৮ দশমিক ৬০৫-এ নেমে যায় সূচকটি। অক্টোবরের মাঝামাঝির পর থেকে এটাই সেনসেক্সের সবচেয়ে বড় পতন। অপরদিকে, নিফিটিতে ৩৪৮ পয়েন্ট অর্থাৎ ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ পড়ে সূচক গিয়ে পৌঁছায় ১১ হাজার ২৮৫-এ।২০০৮ সালে বিশ্বমন্দার পর থেকে ইকুইটি সেক্টর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এই সপ্তাহে। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। উপরন্তু বিনিয়োগ করা টাকাও তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। যার ফলে বিশ্ব শেয়ারবাজারে মন্দা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।মিতশুবিশি ইউএফজে মরগান স্ট্যানলি সিকিউরিটিজের প্রধান বিনিয়োগ কৌঁসুলি নরিহিরো ফুজিতো বলেন, এ দরপতন কতদিন অব্যাহত থাকবে এবং কতটা খারাপ পর্যায়ে যাবে, তা কেউ বলতে পারছে না।অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শুক্রবার ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে ব্যারলপ্রতি দাম হয়েছে ৫১ দশমিক ১ ডলার। মার্কিন ডলারের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার ডলার, ইন্দোনেশিয়ার রুপিয়া আর ভারতের রুপির কিছুটা দরপতন ঘটেছে।করোনাভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ায় এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে। পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এই ভাইরাসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চীন থেকে আমদানি-রফতানি। ফলে ওই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে চীনের উহান শহরে এই মহামারী দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলেই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

 

 

 

 

Development by: webnewsdesign.com