কমলগঞ্জে এসিল্যান্ডের ওপর হামলা: গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরে ঘরে তালা

পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নারী আসামিরাও

মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ৩:০১ অপরাহ্ণ

কমলগঞ্জে এসিল্যান্ডের ওপর হামলা: গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরে ঘরে তালা
apps

গ্রেপ্তার আতঙ্কে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের রাজকান্দি এলাকার ঘরে ঘরে তালা ঝুলছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অধিকাংশ বাড়ির পুরুষরা বাড়ি ছাড়া। দিনের বেলায় হাতেগোনা কয়েকজন পুরুষকে দেখা গেলেও রাতে সে সংখ্যা নেমে আসে শূন্যের কোটায়। কমলগঞ্জের এসিল্যান্ডের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পর থেকে পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি কমলগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজকান্দি এলাকার সরকারি খাসজমি বের করে ‘দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্পের ২০টি গৃহ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়। ১৬ই নভেম্বর প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সাইনবোর্ড স্থানীয়রা ভেঙে ফেলে। ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার শিকার হন কমলগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী।

এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এসিল্যান্ড নাসরিন চৌধুরী, নারী পুলিশ সদস্য সেলিনা আক্তারসহ ৬ জন আহত হন। এ সময় এসিল্যান্ড এর ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর পরই কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংক্ষিপ্ত পরিসরে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি। এদিকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার দিন রাতে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। সরকারি কাজে বাধা, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে কমলগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরীন চৌধুরী বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মামলায় নারী-পুরুষ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৫৩-৫৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলার পর ওইদিন রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮ জন ও পরে আরো ২ জনসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশ। আটক ১০ জনের মধ্যে ২ জন এজাহার নামীয় আসামি। বাকিদের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত নয় তাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। রোববার বিকালে সরজমিনে দেখা যায়, মামলার প্রধান আসামি সুন্দর মিয়ার বাড়িসহ ঘটনাস্থলের আশপাশের বাড়িগুলোতে কোনো মানুষ নেই। প্রতিটি বসতঘরে ঝুলছে তালা।

গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ির পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোনো কোনো বাড়িতে পুরুষ থাকলেও হঠাৎ গাড়ির শব্দ পেলেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রেপ্তার আতঙ্কে নিরপরাধ অনেক মানুষও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানান। আলাপকালে স্থানীয় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে গিয়ে নিরপরাধ কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়।

সেই বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি তিনি জোর দাবি জানান। কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আটক করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন কাউকে পুলিশ আটক করবে না বলেও জানান ওসি।

Development by: webnewsdesign.com