নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় আলোচিত ছাত্র নেতা মোশারফ হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর আজ। দলীয় কোন্দলের জেরে ২০০২ সালের ১৭ অক্টোবর দিনদুপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে মোশারফকে হত্যা করে সহপার্টিরা। এ হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডাক্তারের সাক্ষী নেওয়া এখনো বাকি রয়েছে। যেকারণে এখনো শেষ হয়নি বিচারকার্যক্রম। এতে করে ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে নিহত মোশারফ হোসেনের পরিবার।
এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিহতের পরিবার। নিহত মোশারফের স্ত্রী রেহেনা বেগম বলেন, আমার স্বামী নরসিংদী জেলা ছাত্র দলের সদস্য ছিলেন। অল্পদিনের ব্যবধানে জনপ্রিয় হয়ে রাজনীতিতে বহুদূর এগিয়ে গিয়ে ছিলেন। তিনি পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হয়ে ছিল। যার কারণে সহপার্টিরা সহ্য করতে না পেরে তাকে দিন-দুপুরে খুন করে। ছাত্র নেতা মোশারফ হত্যা মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, দলীয় কোন্দলের জেরে ২০০২ সালের ১৭ অক্টোবর প্রকাশ্যে দিনেদুপুরে উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পলাশ বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ছাত্র নেতা মোশারফকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে তারই সহপার্টিরা । এসময় মোশারফের সাথে থাকা স্থানীয় এক সাংবাদিক জাহিদ হোসেনকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়।
এ ঘটনার পর মোশারফের বাবা সবজে আলী মৃধা বাদি হয়ে স্থানীয় ছাত্র দলের ১৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫ থেকে ৭ জনকে আসামী করে পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত মোশারফের বাবা সবজে আলী মৃধা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ছেলের সাথে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী নিয়ে সহপার্টিদের সঙ্গে শত্রুতা চলছিল। ঘটনার দিন মোশারফ ঠিকাদারী (ব্যবসায়িক) কাজে নরসিংদী রোডস এন্ড হাইওয়ে অফিস থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসার পথে আগে থেকেই উৎপেতে থাকা স্থানীয় ছাত্র দলের সন্ত্রাসীরা পলাশ বাসস্ট্যান্ডে মোশরাফকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে।
হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় থানায় মামলা করার পরে পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার জেলহাজতে পাঠালেও এখন সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছে। তারপর থেকেই চলতে থাকে মামলার তদন্ত কাজ। দীর্ঘদিন মামলার তদন্ত কাজ শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বিচারকার্য শেষ হয়নি। তিনি আরও জানান, ছেলে হত্যা মামলার ১৪ জন আসামী থেকে অনেককেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এখন ছয়জন আসামীর বিচারকার্য চলছে আদালতে। মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডাক্তারের সাক্ষী নেওয়া এখনো বাকি রয়েছে। এই দুইজন সাক্ষী অজানা কারণে দীর্ঘ সাড়ে ৬ বছরেও নেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছি। তাই ছেলে হত্যার ন্যায় বিচারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তেক্ষেপ কামনা করছি।
Development by: webnewsdesign.com