বরাবরের মতো পুরনোকে বিদায় জানিয়ে শুরু হয় নতুন এর আবির্ভাব। এ যেন পরিবর্তন এর পালা বদল। আজকের দিনটাকে স্বরণ রাখতে বিশ্বের সকল দেশ সহ বাংলাদেশও সরকারি ও বেসরকারি ভাবে দল-মত-নির্বিশেষে দিনটি পালন করে আসছে। এই দিনটাকে বরণ করার জন্য হরেক রকমের নিয়ম পালন করে বিশ্বের প্রায় সকল দেশ, তবে সব দেশের এই উৎসব এক রকম না নতুনকে বরণ করার মধ্য দিয়েই এই শুভ নববর্ষ এর সূচনা যা ইংরেজীতে হ্যাপি নিউ ইয়ার বলে। যেহেতু এটা ইংরেজি নববর্ষ সেহেতু একটু ভিন্ন রকমের আনন্দের ছোয়া থাকবে বাঙ্গালীদেরও।
এই হ্যাপি নিউ ইয়ার বলতে গেলে সবচেয়ে প্রাচীন উৎসব। এই উৎসবটি বিশ্বজুড়ে ইংরেজি নববর্ষ বা হ্যাপি নিউ ইয়ার নামে পরিচিত। ঐতিহ্যের ছোঁয়া লাগাতে রোমান ক্যালেন্ডার এর নতুন বর্ষ শুরু হতো পহেলা মার্চে কিন্তু গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার মতে অনেক দেশ পহেলা জানুয়ারিতে এই উৎসব পালন করে আসছে।
পূর্ব ইতিহাস বলে প্রায় চার হাজারের বেশি বছর আগে খ্রিস্টপূর্ব ২ হাজার অব্দে সেই সময় মেসোপটেমীয় সভ্যতায় প্রথম বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয়। বর্তমান ইরাককে সেই সময় মেসোপটেমিয়া বলা হতো।প্রাচীনকালে এই মেসোপটেমিয়া সভ্যতার একটি অংশ ব্যাবিলনীয় সভ্যতা।
সেই সময় রোমান সরকারের নতুন অধিবেশন শুরু হতো পহেলা জানুয়ারিতে সরকারের পালাবদল তাই খ্রিস্টপূর্ব ৮ সালে আরেক দফায় পরিবর্তন ঘটান সর্বশেষ পোপ ১৩তম গ্রেগোরী ১৫৮২ সালে পরিবর্তন হয় ক্যালেন্ডারের। আর সেই ক্যালেন্ডার এর নতুন পরিবর্তন হলো পহেলা জানুয়ারি।
এর পূর্বে অবশ্য ইরাকের ব্যবিলনীয় সভ্যতা জাঁক জমকভাবে পালন হতো। বর্ষ বরণ আমাদের মত তখন পহেলা জানুয়ারিতে সেই উৎসব পালন করা হতো না। পালন করা হতো বসন্তের প্রথম দিনে শীতের শেষে যখন বসন্ত নতুন সাজে প্রকৃতিকে সাজিয়ে পল্লবে সবুজ, ফুলেতে রঙ্গিন করে আর পাখির কুহু কুহু কলরবে বর্ষবরণ উৎসব পালন করতো। এমনকি সেই সময় রোমানরাও এই ব্যাপার নিয়ে ব্যাবিলনীয় সভ্যতা কে অনুকরণ করে চলতো।
আসলে এই দিনটাকে আগে কেউ কেউ ধর্মীয় মনোভাব নিয়েও পালন করতো। এসব অনুষ্ঠানে বড় আয়োজন করে আতশবাজি ফাটিয়ে নতুনকে বরণ করা। নতুন কাপড় পরিধান করা। প্রিয়জনদের নতুন গিফট দেওয়া,ভাল খাওয়ার পরিবেশন করা এমনকি পার্টির আয়োজনে বিদেশীরা সভ্যতার অনুকরণ অনুযায়ী তখনকার দিনে দামি মদ রাখতে ভুলতেন না আপ্যায়নের লিস্টে।
আসলে এক এক খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের সম্রাট, রাজা নামক শাসকরা সভ্যতার পরিবর্ত ঘটিয়ে আজ পৌঁছেছে আমাদের “পহেলা জানুয়ারি” । সভ্যতার সকল ইতিহাসের ইতি টেনে পরিবর্তন এর সকল নিয়ম যুদ্ধ পেরিয়ে আজকের এই আধুনিক সভ্যতা “পহেলা জানুয়ারি” ক্যালেন্ডারে ঠাঁই পেয়েছে ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে।
তাই আধুনিক সভ্যতার এই যুগে আমরাও পালন করি নতুন বছর। বাংলার মাটিতেও এই নববর্ষ ভাল ভাবেই পালন করা হয়। আমাদের ধর্মের নিয়ম বহির্ভূত হলেও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আধুনিকতার প্রতি সহমত পোষন করে আমরাও এই দিনটাকে আনন্দের দিন হিসাবে পলন করে থাকি।
আসলে গুণীজনদের বিশাল সৃষ্টি অবিস্মরণীয়।পহেলা জানুয়ারি যার সারমর্ম হলো আতশবাজি ফাটিয়ে জানাই পুরাতনকে বিদায় আর রঙ্গিন আতশবাজির রং গুলো যেন বরন করে নতুন এই দিনটাকে “পহেলা জানুয়ারি”।
Development by: webnewsdesign.com