ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, উলামায়ে কেরামের দাবির মধ্যে মরহুম বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোন বিদ্বেষ ছিলো না, অসম্মানও ছিলো না। বরং বিষয়টি ছিলো দেশের জনগণের বোধ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক মূর্তি স্থাপন না করে অন্য কোন পন্থায় তাকে স্মরণ করার দাবি। আলেমসমাজ ও সাধারণ মুসলিম ধর্মপপ্রাণ জনগণ এ ক্ষেত্রে সরকারের কাছে নিজেদের প্রাণের আকুতি তুলে ধরতেই পারে। মানা না মানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। এই যৌক্তিক দাবিকে কেন্দ্র করেই তারা তাদের দীর্ঘদিনের লালিত মূর্তি প্রীতি ও বিজাতীয় চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বিষয়টিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় উলামায়ে কেরামকে অপদস্থ করার হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে। এসব কোন দেশপ্রেমিক মানুষের কাজ হতে পারে না।
তিনি মঙ্গলবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যমান আইন কানুন মেনেই তৌহিদী জনতা সমাবেশ করেছে এবং সেখানে শালীন ভাষাতেই যৌক্তিক ভাবে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়েছে। একই সাথে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর বিকল্প পন্থাও প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়টি একেবারেই স্বাভাবিক একটি নাগরিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করলাম, একটি সুবিধাভোগী মহল বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশে চরম উস্কানী ও উত্তেজনা তৈরী করছে। সরকার যেখানে প্রতিবাদ সমাবেশের অনুমতি দিয়ে যৌক্তিক আলোচনা ও মতামতের পরিবেশ সংযমের সাথে বজায় রেখেছে সেখানে জনবিচ্ছিন্ন সুবিধাভোগী শ্রেণিটি উলামায়ে কেরামকে সন্ত্রাসী ভাষায় গালিগালাজ করছে, ঢালাওভাবে অপবাদ দিচ্ছে। মাহফিলের মতো চিরায়ত ধর্মীয় সংস্কৃতিকে উগ্রপন্থায় প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে। রাজপথে সন্ত্রাসী কায়দায় উগ্র বক্তব্য ও স্লোগান দিচ্ছে। প্রকাশ্যে আলেমসমাজকে মারধর, অপমান এমনকি তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
চরমোনাই পীর বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি ইস্যুতে চরম উস্কানীর মুখেও দেশের শান্তি ও স্থিতিশিলতা বজায় রাখার স্বার্থে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সীমাহীন ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে এসেছে। কিন্তু এরই মাঝে গতকাল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি ভূইফোড় সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের নামে একটি জঘন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। সঙ্গে আরো দুইজন বিশিষ্ট আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হকের নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু মনে করিনি। যে কারণে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করেছি মাত্র। আমরা আমাদের দলীয় ব্যানারে বা কোন সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে কোন কর্মসূচিও দেইনি।
চরমোনাই পীর বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মাওলানা মামুনুল হক এর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি যারা দেশের ওলামা সমাজকে এবং সম্মানিত ধর্মীয় ব্যক্তিদেরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে, কটুক্তি করে, ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে অপমান অপদস্ত করে, প্রাণ নাশের হুমকি দেয়, সংঘাত, মারামারির আহ্বান জানায় তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, বরকত উল্লাহ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, জিএম রুহুল আমীন, মাওলানা খলিলুর রহমান, এডভোকেট একেএম এরফানুল হক চৌধুরী, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, নুরুল করীম আকরাম, এডভোকেট আবদুল বাসেত প্রমুখ।
Development by: webnewsdesign.com