বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ২৮ তম ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৯৯২ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনটি ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিবন্ধীতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা এবং উন্নতি সাধন নিশ্চিত করা। অন্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিবন্ধীতা বলতে স্বাভাবিক ক্ষমতার অভাবকেই বুঝায়। প্রতিবন্ধীতা কোন রোগ নয়। তাই ওদের প্রতি করুনা নয় বরং সহযোগিতার মনোভাব পোষন করতো হবে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ প্রতিবন্ধী। বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ‘অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা ‘ নিশ্চিতকরনে আইন প্রনয়ন করেন। কারন আমাদের জাতীয় উন্নয়নে এরাও বড় অবদান রাখতে পারবে। তাই এদের কাজের জায়গাটা আমাদের ঠিক করে দিতে হবে। ‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা খুব অপ্রিয় শুনায়। তাই বর্তমানে এদের ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠী’ বলা হয়। কারন এই বিশাল জনগোষ্ঠী নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে অলিম্পিকের মত জায়গায়ও। তাই শুধু সরকার নয় দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের প্রতিবন্ধিতা না দেখে তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে হবে। তারা বোঝা নয় বরং সহযোগিতা পেলে তারাও দেশের সম্পদে রূপান্তরিত হতে পারে। এজন্য ব্যক্তি ও সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তন জরুরী। বর্তমান সরকার ১০ টি লক্ষ্য নির্ধারন করে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকুরী উভয় জায়গায় প্রতিবন্ধীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে সরকারের টার্গেট আইসিটি বিভাগের মাধ্যমে অন্তত তিন হাজার প্রতিবন্ধীর চাকুরী নিশ্চিত করা। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অনুযায়ী চাকুরীর ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব হওয়ার পরেও সঠিক কাউন্সিলিং ও কার্যকারিতা না থাকায় অধিকাংশ প্রতিবন্ধী এদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। সংখ্যাগরিষ্ঠ এ মহলকে এগিয়ে নেয়া দেশ ও জাতির কর্তব্য। মনে রাখতে হবে প্রতিবন্ধীরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের বাদ দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব না। সচেতন নাগরিকেরা যদি তাদের কাজে লাগাতে পারে তাহলে তারা দেশের বোঝা নয়, বরং সম্পদে পরিণত হবে।
মারিয়া অনি
বাংলা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
Development by: webnewsdesign.com