সাতপাকে বাঁধা পড়লেন সৌম্য সরকার

বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১২:১২ অপরাহ্ণ

সাতপাকে বাঁধা পড়লেন সৌম্য সরকার
apps

খুলনার মেয়ে প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন ক্রিকেটার সৌম্য সরকার।

আলো ঝলমল খুলনা ক্লাব। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে গোটা ক্লাব প্রাঙ্গণ। সানাইয়ের সুর আর ঢোলের বাদ্য বাজনায় উৎসবের এই আমেজকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরো বহুগুণ। রূপসী খুলনার মেয়ে প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজার সঙ্গে আলো ঝলমল এই ক্লাবেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সৌম্য সরকার। ২২ গজের ক্রিকেটার পা দিলেন তাঁর নতুন জীবনে। শুরু হলো সৌম্য সরকারের নতুন ইনিংস।

গতকাল বুধবার রাত ৮টায় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আর বাদ্য বাজনা বাজিয়ে পাঁচশ বরযাত্রীর বিশাল বহর নিয়ে খুলনা ক্লাবে বিয়ে করতে এসেছিলেন সৌম্য। সেখানে কণে পক্ষ বরযাত্রীদের বরণ করে নেন রঙ-বেরঙের ফুল ও ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে চারটি প্রাইভেট কার, আটটি মাইক্রোবাস ও ছয়টি বাসের বহরে পাঁচশ বরযাত্রী নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন সৌম্য।

রাত সোয়া ১১টায় অগ্নিকে সাক্ষী রেখে সাত পাকে ঘুরেন বর-কনে দু’জন। এরপর একে অপরে মালা বদল করেন। এ সময় ঢাক ঢোল কাশির বাদ্য আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারদিক। উৎসব মুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয় বিয়ে। এ সময় দুই পরিবারের নিকট আত্মীয়রা আশীর্বাদ করেন নতুন বর-বধূকে। সৌম্য সরকারও সকলের উদ্দেশে তাদের নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা প্রার্থনা করেন।

সৌম্য সরকারের মামা স্বদেশ কুমার সরকার বলেন, সনাতন ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে রাত ১১টায় সৌম্য সরকারের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

সৌম্যের স্ত্রী প্রিয়ন্তি দেবনাথের বাবা গোপাল দেবনাথ পেশায় ব্যবসায়ী ও মা মাধবী দেবনাথ গৃহিণী। তাদের বাড়ি খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া এলাকায়। পূজা বর্তমানে ও লেভেল পড়ছেন ঢাকার একটি কলেজে। তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। দেশের তারকা ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের বিয়েকে ঘিরে মিডিয়াকর্মীদের সরব উপস্থিতি ছিল খুলনা ক্লাবে। ক্রিকেটারকে সামনে পেয়ে আগত অনেকের মধ্যে সেলফি তোলার ধুম পড়ে যায়। বিয়ের পর নববধূকে নিয়ে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন সৌম্য সরকার ও তার পরিবার। আগামীকাল শুক্রবার ২৮ (ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরার মোজাফ্ফর গার্ডেনে সৌম্য সরকারের বৌ-ভাত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে বিবাহ অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা। সৌম্যর বাবা কিশোরী মোহন সরকার, বরযাত্রী শিল্পপতি দ্বীনবন্ধু মিত্র ও সৌম্যর বন্ধু অলিসহ সৌম্যর স্বজনদের সাতটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ সময় সৌম্যর মেঝ ভাই ইনকাম ট্যাক্সের ডেপুটি কমিশনার প্রণব কুমার সরকার খুলনা ক্লাবের কর্মচারীদের মোবাইল ফোন চুরির বিষয়ে অবহিত করেন। এর পর পরই শুরু হয় অপ্রীতিকর ঘটনা। আধা ঘণ্টা ধরে বাগবিতণ্ডার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সৌম্য সরকারের মামা স্বদেশ কুমার সরকার বলেন, প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে গেট থেকে ঢোকার সময় দ্বীনবন্ধু মিত্রের মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। এর পর সৌম্যর বাবা, বন্ধু অলিসহ বর যাত্রীদের সাতটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার পর হারানো মোবাইল ফোনে ফোন দেন সৌম্যের স্বজনরা। তখন একজনের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। তাকে ধরলে তার কাছে ৫টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ নিয়ে গন্ডগোলোর সূত্রপাত হয়।

এদিকে ঘটনার পর খুলনা ক্লাবে বিপুলসংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরে পুলিশ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন লোকজন সৌম্যের অভিভাবকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন।

এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বলেন, মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খুলনা ক্লাবের স্টাফ ও বরযাত্রীর লোকদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। সেখানে কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তবে ভিড়ের মধ্যে কারো গায়ে একটু ধাক্কা লাগতে পারে। দুই চোর থানায় আটক আছে। তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Development by: webnewsdesign.com