চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় মানবসম্পদের দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই

রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ২:১০ অপরাহ্ণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় মানবসম্পদের দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই
apps

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় দেশের মানবসম্পদের দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি ও স্টার্ট আপে সহায়তা দিতে সরকার বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ।

প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই শিক্ষার্থীদের কোডিং শেখানো হচ্ছে। ন্যাশনাল স্কিল ডেভলপমেন্ট অথরিটি কাজ করছে। গতকাল রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ প্রতিযোগিতা ‘স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ডকাপ’ বাংলাদেশ অঞ্চলের চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফর ডাবল ডিজিট গ্রোথ’ শীর্ষক সেশনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন, ভিসিপিয়ার চেয়ারম্যান ও ইনজেনারেল গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান।

 

 

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পেগাসাস টেক ভেঞ্চারসের জেনারেল পার্টনার ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিস উজ্জামান, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডক্টর জামাল উদ্দিন আহমেদ, চাকরি খুঁজব না চাকরি দেবো-এর ফাউন্ডার মুনীর হোসেন।

দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের একটি স্টার্টআপ সিলিকন ভ্যালির আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করবে।বিজয়ী পাবেন এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ। বক্তারা বলেন, এসব স্টার্টআপগুলোতে বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবে দেড় লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৭ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ভিশন ২০২৫ এ ২০২৫ সাল নাগাদ প্রত্যেক্ষভাবে ১০ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।সালমান এফ রহমান বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতিমধ্যেই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য ইতিমধ্যে সরকার দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে, যাতে এসব শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকে গিয়েই প্রোগ্রামার হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

তবে স্টার্টআপের জন্য তহবিল একটি চিন্তার বিষয় হলেও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তা যথাযথভাবে হয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জ্বালানি, কৃষি ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিগত ১১ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে। গার্মেন্ট সেক্টরের পর তথ্য প্রযুক্তি বাংলাদেশের নেক্সট বিগ থিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

 

 

 

 

একই সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে সব সময় খোঁজখবর রাখছেন ও নিজে তদারকি করছেন।অনুষ্ঠানে ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাত থেকে এক হাজার কোটি ডলার বা দশ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তখন এই খাতে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং ১০০ কোটি ডলারের বেশি মূলধনের ৫টি কোম্পানি তৈরি হবে। এই খাতের জন্য অর্থের সহজলভ্যতা দরকার হবে জানিয়ে শামীম আহসান বলেন, ইতিমধ্যে এ খাতে অর্থায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক খুবই কম সুদে দুই কোটি ৫০ লাখ ডলারের একটি ঋণ তহবিল গঠন করেছে। এছাড়া সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতও এগিয়ে আসছে।আলোচনায় ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’ এর প্রতিষ্ঠাতা মুনির হাসান বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আসলে প্রতিবছর একটি পরীক্ষায় পাস করানোর জন্য দেয়া হয়। বাস্তবতার শিক্ষা দেয়া হয় না। তাই আমরা দক্ষ জনশক্তির অভাবে পড়েছি।

 

 

 

 

এখান থেকে বেরিয়ে প্রয়োজন ভিত্তিক পড়াশুনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের জনমিতির সুবিধা নিতে হলে দক্ষ জনশক্তি তৈরির কোনো বিকল্প নেই। এই সুবিধার শতভাগ নিতে হলে জনশক্তি দরকার। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রথম বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠানের একটি হচ্ছে বেক্সিমকো গ্রুপ।

এ খাতের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ব্যাপক অবদান রয়েছে।অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে শুধু একটি এক বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি রযেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে অন্তত ৫টি বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের কোম্পানি অথবা ইউনিকর্ন তৈরির লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ১.৪৫ বিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম রয়েছে।

 

 

 

এটিকে ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সেমিনারে উল্লেখ করা হয়।মুজিববর্ষকে সামনে রেখে এ বছর জাঁকজমকভাবে স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২০ যৌথভাবে আয়োজন করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইসিটি ডিভিশন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও বাই ইজেনারেশন। স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপের বাংলাদেশ আঞ্চলিক পর্বে দেড় শতাধিক স্টার্ট আপ আবেদন করে। এর মধ্যে আঞ্চলিক চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়ার জন্য দেশের ৮টি কোম্পানিকে নির্বাচিত করা হয়।

Development by: webnewsdesign.com