যারা অন্যায়ভাবে সম্পদ লুট করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করেছে এবং ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এমন দাবি জানায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত প্রতিনিধিদলটি গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে।
ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল প্রমুখ।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে গভর্নর সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ঋণের যে কিস্তি পরিশোধের সময়, তা অন্তত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য সফট ঋণের প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
মাহবুবুল আলমের আরও বলেন, আগের সরকারের শেষের দিকে ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করেছেন আগের গভর্নর। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১০ থেকে ১৫ বছরের জন্য গ্রেস পিরিয়ড চাওয়া হয়েছে।
এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, যারা অন্যায়ভাবে সম্পদ লুট করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করেছে এবং ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে অনুরোধ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভালো ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, যারা বিনিয়োগ করেন তারা ১০০ টাকায় ১০ টাকা লাভ করেন। আর যারা দুর্বৃত্তায়ন করেন তারা ১০০ টাকা অর্জন করলে তাদের একশ টাকাই লাভ। গত ১০/১৫ বছর ধরে এভাবে দেশের সম্পদ সৃষ্টি না করে কিছু দুর্বৃত্ত সম্পদ গড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) পরিমাণ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আমদানি রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ইডিএফ বৃদ্ধির কথা বলেছি। ব্যাংকিং খাতে সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ঋণের কিস্তি ৬ মাসের জন্য স্থগিত চেয়েছি।
সুদহার কমাতে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবে গভর্নর জানান, ছয় সাত মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা হবে। ততদিন বর্তমান সুদহার বলবৎ থাকবে। তারপরও সুদ কমিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেবেন। ব্যবসায়ীরা ইডিএফ-এর তহবিল নিয়ে ফেরত দেননি, এটা সঠিক নয় বলে জানান বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, কারা ইডিএফ-এর তহবিল নিয়ে ফেরত দেননি আমরা জানি, বাংলাদেশ ব্যাংকও জানে। যারা ইডিএফ-এর তহবিল নিয়ে ফেরত দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংককে আমরা সমর্থন করব।
Development by: webnewsdesign.com