অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ ৬ মাসে বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বাড়ল। ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণের সুদহার নির্ধারণে সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল বা ‘স্মার্ট’ তুলে নেওয়ার পর ঋণের সুদ হার বৃদ্ধি করার কারণে ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। সোমবার (০১ জুলাই) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
যে-সব ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে, তার মধ্যে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। ২০২৪ সালে (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংকটি পরিচালন মুনাফা করেছে দুই হাজার ২৬০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল এক হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংক মুনাফা করেছে ৪৫০ কোটি টাকা; আগের বছর একই সময় ছিল ৩২০ কোটি টাকা।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বছরের প্রথম ছয় মাসে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৭৯ কোটি। গত বছরের একই সময়ে ৪০৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল ব্যাংকটি। আলোচিত সময়ে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১৭২ কোটি টাকা। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি (এসআইবিএল) পরিচালন মুনাফা করেছে ২১১ কোটি টাকা; যা আগের বছর করেছিল ২০০ কোটি টাকা। চতুর্থ প্রজন্মের মধুমতি ব্যাংক ২০২৪ সালে প্রথম ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ১৮০ কোটি টাকা; আগের বছর একই সময় মুনাফা করেছিল ৮১ কোটি টাকা। ইউনিয়ন ব্যাংকের মুনাফা ২৫০ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল ২১০ কোটি টাকা।
নাম না প্রকাশের শর্তে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকে তারল্য সংকট, ঋণ আদায় কম, মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি এবং প্রভিশন ঘাটতি বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের তীব্র সংকটসহ নানা সমস্যা থাকায় ব্যাংকে মুনাফা বেড়েছে। এটা অসামঞ্জস্য লাগতে পারে। এটাও চিন্তা করতে হবে এ সময়ে সুদ হার বাড়ানোর ফলে কিছুটা সুবিধাও পাওয়া গেছে।
খেলাপি ঋণের পাশাপাশি বাড়লে মুনাফা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ঋণের চেয়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ।
হিসাব অনুযায়ী, এক বছরে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে তিন মাসেই বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে যা ছিল এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
Development by: webnewsdesign.com