আমাদের দেশে এক সময় কথাটি খুব প্রচলিত ছিল, কুড়িতেই বুড়ি। আর শুধু বলার জন্য বলা নয় এটাই বিশ্বাস করাও হতো।
বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা ছিল ধ্রুব সত্য। কোনো মতে স্কুল না পেরোতেই বিয়ে তারপর সন্তান সংসার কতো দায়িত্ব!
স্বামীর সঙ্গে কোথাও ঘুরতে যাওয়া তো দূরের কথা সাংসারিক কাজের বাইরে কথা বলাও যেন অন্যায়। আর নিজের জন্য সময়, রূপচর্চা, সাজগোজ, ক্যান্ডেল নাইট ডিনার, সিনেমা দেখা অথবা ছুটিতে পরিবারের সবাই মিলে নীলগিরি বা কক্সবাজার এসব তো ছিল দিবাস্বপ্ন
দিন পাল্টেছে এখন নারীরা অনেক বেশি স্বাধীন, শিক্ষিত আর সচেতন। আমরা পরিবার এবং কাজের জায়গা একসঙ্গে সামলে রাখছি। আমাদের সন্তানরাও ক্লাসে ভালো রেজাল্ট করছে, আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গেও থাকছে নিয়মিত যোগাযোগ, মাত্র ১০ মিনিটের নোটিশে তৈরি হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছি বন্ধুর দাওয়াতে, এতকিছু দেখে পতীদেবরাও খুশি স্ত্রীর সব সামলে নেওয়ার দক্ষতায়।
সব কিছুর পেছনে রয়েছে শুধুমাত্র মানসিক শক্তি আর উদ্যোম। ভালো থাকার এবং ভালো রাখার মানসিকতা। তবে সবার আগে নিজের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। পরিবারের দায়িত্ব আমাদের, সেই সঙ্গে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ পদও সামলে যেতে হয় সমান তালে এজন্য নিতে হবে নিজের যত্ন।
মনে রাখুন, নারীর জীবনে পূর্ণতা এনে দেয় মাতৃত্ব। তাই এ বিষয়টিকে অবহেলা না করে গর্ভকালীন প্রতিটি শারীরিক-মানসিক পরিবর্তন আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করতে হবে।
সন্তান হয়েছে বলে আমার জীবনের সব চাওয়া পাওয়া শেষ, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সন্তান অবশ্যই জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে। তবে নিজের চাওয়া, স্বামীর সঙ্গ, তার সঙ্গে বন্ধুত্ব এগুলো দূরে সরিয়ে রাখলে নিজেদের দাম্পত্য জীবন রোবটের মতো হয়ে যাবে। শুধুমাত্র বাজার করা রান্না করার মধ্যে জীবনটাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলবেন না।
সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই শেখান সংসারে সবার মধ্যেই বন্ধুত্বের একটি সম্পর্ক থাকে। এটা আপনার জীবন যেমন সুন্দর করবে আপনার সন্তানের মধ্যেও পরিবার সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা তৈরি হতে সাহায্য করবে। বয়স হয়ে যাচ্ছে এখন আর কেন রূপচর্চা, শরীরচর্চা এটা ভাবলে চলবে না। শরীরের যত্ন নিতে হবে, থাকতে হবে সুস্থ, সুন্দর, হাসিখুশি এবং একদম ফিট।
সুস্থতার জন্য নিয়মিত ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন, আর অন্য কিছু করার সময় না পেলে বাড়িতে ফেরার সময় গাড়িতে না উঠে হাঁটুন ত্বক ও চুল ভালো রাখতে প্রচুর পানি পান করুন এবং তাজা ফল ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন বাইরে যাওয়ার সময় ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন কাজ তো করতেই হবে সঙ্গে পরিমাণমতো বিশ্রামও নিন সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। মাসে দু-একবার পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল, পেডিকিওর-মেনিকিওর ও হেয়ার ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।
সারা সপ্তাহ কাজে ব্যস্ত থাকার পর ছুটির দিনে স্বামী সন্তান নিয়ে একবেলা বাইরে ঘোরার প্ল্যান রাখুন, কেনাকাটা, বাইরে খাওয়া, সিনেমা দেখা যে কোনো কিছু সব শেষে বলবো, নিজের শখগুলোকে হারিয়ে যেতে দেবেন না প্লিজ। সময় পেলেই হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝে। দেখবেন বসন্তের এই দিনে ফুলের সঙ্গে মিতালী আজও আছে আগের মতোই
Development by: webnewsdesign.com