মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করে, না হয় এলাকা ছেড়ে ভাগে: প্রধানমন্ত্রী

রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২০ | ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করে, না হয় এলাকা ছেড়ে ভাগে: প্রধানমন্ত্রী
apps

সারা দেশে পুরনো রেল সেতুগুলো মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকর নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একগুচ্ছ উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের অপর প্রান্তে থাকা বিভিন্ন জেলার মানুষের কথাও শোনেন। পানি শোধনাগার উদ্বোধন প্রসঙ্গে অনেক অর্থ খরচ করে পানি শোধন করে সেই পানি সরবরাহ করা হয় জানিয়ে দেশবাসীকে পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

 

 

 

তিনি বলেন, ‘এই পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে। পানির অপচয় বন্ধ করতে হবে।’ ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা.. সেখানে এক সময় আমি নিজেও খুব উৎসাহিত করতাম। কিন্তু পরবর্তীতে লক্ষ্য করলাম যে ঋণের পরিমাণ এত বেড়ে যায় যে শেষে মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে হয় আত্মহত্যা করে, না হয় এলাকা ছেড়ে ভাগে, না হয় ছেলে মেয়ে বিক্রি করে, বাড়িঘর বিক্রি করে। নিঃস্ব হয়ে যায়। সে আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। অর্থাৎ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যকর হয় না।’ অতীতে সামরিক শাসনের সময় উন্নয়নের দিক থেকে গ্রামের মানুষ বা সাধারণ মানুষ সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন ক্ষমতায় আসে সংবিধান লঙ্ঘন করে, অবৈধভাবেৃ তখন তারা একটা এলিট শ্রেণি তৈরি করে বা কিছু লোককে তারা অর্থ সম্পদের মালিক করে। তাদেরকে দিয়ে তারা ক্ষমতার ভিত্তিটা শক্ত করতে চায়। বঞ্চিত থেকে যায় অবহেলিত জনগোষ্ঠী।’ এ সময় পুরনো রেলব্রিজগুলোকে সংস্কারের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে একটা সার্ভে করে যেখানে যত পুরনো জরাজীর্ণ রেল ব্রিজ আছে, সেগুলো সব মেরামত করতে হবে। সেজন্য একটা প্রজেক্ট আলাদাভাবে আমি মনে করি তৈরি করে আনবে। তাহলে আমরা সেটা করে দিতে পারি এবং দ্রুত কাজগুলো করতে পারি।’ অতীতের সরকারগুলো রেল যোগাযোগকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রেলওয়েকে আমরা এখন সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী যেসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন সেগুলো হলো- রেলওয়ের ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস’; ঢালারচর-পাবনা-রাজশাহী রুটে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ফরিদপুর রুটে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের রুট বর্ধিতকরণ এবং চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের বহর পরিবর্তন কার্যক্রম।

 

 

 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা দেওয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপস ভিত্তিক ‘পল্লী লেনদেন’ কার্যক্রমের উদ্বোধন। এলজিইডির বাস্তবায়নাধীন ‘গুরুত্বপূর্ণ নয়টি ব্রিজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় ১৫ হাজার মিটার চেইনেজে তিতাস নদীর ওপর ৫৭৫ মিটার দৈর্ঘ্য পিসি গার্ডার সেতু এবং মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর আরএইচডি রাস্তায় কালিগঙ্গা নদীর ওপর ৪৫৬ মিটার পিসি গার্ডার সেতু। চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্প’র (১ম সংশোধিত) আওতায় নির্মিত ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার’ এর উদ্বোধন। খুলনা ওয়াসার ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’র আওতায় নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ উদ্বোধন। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Development by: webnewsdesign.com