লাহোরের এই ম্যাচের উইকেট স্লো ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অমন উইকেটেও ১৪১ রান নিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না। ৫ উইকেটে পাকিস্তানের কাছে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা হেরে সেই শিক্ষা নিয়েই ফিরল বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের সময়ও লাহোরের গাদ্দাফি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে কোনো বদল আসেনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা শোয়েব মালিক দেখিয়ে দিলেন এসব উইকেটে কেমন করে দলকে জেতাতে হয়। ৪৫ বলে অপরাজিত ৫৮ রান করে পাকিস্তানের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যান।
জয়ের জন্য মাত্র ১৪২ রান তাড়ায় নামা পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হলো বাংলাদেশের চেয়েও বাজে। পাওয়ার প্লে’তে ৩৬ রানে হারায় তারা দুই উইকেট। ইনিংসের প্রথম বলেই অধিনায়ক বাবর আজম আউট! রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি এই ওপেনার। দলের আরেক সিনিয়র মোহাম্মদ হাফিজ ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন।
শুরুর ১০ ওভারেও পাকিস্তান ঠিক তেড়েফুঁড়ে ব্যাট চালায়নি। লক্ষ্য আয়ত্তের মধ্যে দেখে নিরাপদ ভঙ্গির ব্যাটিংয়ের দিকেই মনোযোগ দেন তারা। জীবনের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে পাকিস্তানি ওপেনার আহসান আলী ৩২ বলে ৩৬ রান করেন।
১২ ওভারে ৮১ রানে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে জয়ের পথ দেখায় শোয়েব মালিক ও ইফতিখার আহমেদের জুটি। বেশি বল নষ্ট না করে এই জুটিতে পাকিস্তান যোগ করে ৩৬ রান।
এমন উইকেটে সাফল্য পেতে হলে ঠিক কোথায় বল ফেলতে হবে- সেই জায়গাটাই খুঁজে পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। উইকেট টু উইকেট বল না করে আশপাশে বল বেশি রাখে। ফলে রান তুলতে পাকিস্তানের কিছুটা সমস্যা হলেও উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে বাড়তি তেমন কোনো কৌশল অবলম্বন করতে হয়নি তাদের।
১৪১ রান তাড়া করতে পাকিস্তানকে ম্যাচের শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলেও ৫ উইকেটের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা। বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে আল-আমিন সেরা সাফল্য দেখান। শুরুর ৩ ওভারে আল-আমিন খরচ করেন মাত্র ১৪ রান। তবে রান খরচায় একটু বেহিসেবি ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ৪০ রানে ১ উইকেট-দলের স্ট্রাইক বোলারের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স কোচের চিন্তা তো বাড়াবেই।
ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৫ রানের। প্রথম বলে শোয়েব মালিক নিলেন ২ রান। দ্বিতীয় বলে এক রান। তবে এক্সট্রা কাভার থেকে সরাসরি থ্রো’টা ঠিক হলে নিশ্চিত রান আউট হতেন শোয়েব মালিক। থ্রো হলো, কিন্তু সেটা স্ট্যাম্প মিস করল। তৃতীয় বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান স্লগ সুইপ খেললেন। মিডউইকেটে ক্যাচ উঠল। সহজ সেই ক্যাচ হাতে নিয়েও রাখতে পারলেন না মোহাম্মদ মিঠুন। এরই ফাঁকে দৌড়ে দুই রান নিলেন রিজওয়ান। সেই রানেই ৫ উইকেটে পাকিস্তানের জয়।
একই মাঠে শনিবার, ২৫ জানুয়ারি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামবে উভয় দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৪১/৫ (২০ ওভারে, তামিম ৩৯, মোহাম্মদ নাঈম ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সৌম্য ৭, মিঠুন ৫*; আফ্রিদি ১/২৩, রউফ ১/৩২ ও শাদাব ১/২৬)।
পাকিস্তান: ১৪২/৫ (১৯.৩ ওভারে, আহসান আলী ৩৬, হাফিজ ১৭, শোয়েব ৫৮*, ইফতিখার ১৬, রিজওয়ান ৫*; শফিউল ২/২৭, মুস্তাফিজুর ১/৪০, আল-আমিন ১/১৮ ও আমিনুল ১/২৮)।
ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।
Development by: webnewsdesign.com