ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান
মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যার পা নেই সেই বুঝে পায়ের মর্মকথা। আর যাদের পা থেকেও সঠিকভাবে হাঁটা চলা-ফেরা করতে পারছেন না তাদের জীবন হয়ে উঠছে দুর্বিষহ। পায়ের গোড়ালির ব্যথা এখন কমন রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে হাঁটাচলার সময় প্রায়ই ব্যথা অনুভব করেন। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর পা মাটিতে বা মেঝেতে ফেলতেই যখন বুঝতে পারবেন পা ব্যথা এবং পায়ের গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা হয় ব্যথার ধরন কিছুটা কাঁটা ফোটার মত কয়েক কদম হাঁটার পর একটু একটু করে ব্যথা কমতে শুরু করে। এ নিয়ে ভোগান্তির অন্ত নেই।
গোড়ালি ব্যাথার কারণ-
১. প্লান্টার ফ্যাসাইটিস
২. রিট্রোক্যালকেনিয়াল স্পার
৩. টারসাল টানেল সিনড্রোম
৪. আঘাত জনিত কারণ
৫. অস্বাভাবিক পায়ের আকৃতি
৬. অতিরিক্ত ওজন
৭. মধ্য/পার্শ্বিক নার্ভ বাধাপ্রাপ্ত হওয়া
৮. দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে কাজ করা
৯. দীর্ঘদিন হাই হিল বা শক্ত সোলের জুতা ব্যবহার করা।
১০. ফ্ল্যাট ফুট।
১১. টিউমার এবং সিস্ট
১২.ইউরিক এসিড বাড়তি থাকার কারনে ও গোড়ালি ব্যথা হতে পারে।
লক্ষণ-
১. পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হবে। সাধারনত হাটলে সেটা আরও বেড়ে যায়।
২. গোড়ালি কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।
৩. খালি পায়ে শক্ত জায়গায় হাঁটলে সাধারনত ব্যথা বেশি বাড়ে।
৪. পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সকালে বেশি থাকে এবং তা বেলা বাড়ার সাথে সাথে একটু কমে আসে।
৫. অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসার পর পা ফেলতে কষ্ট হয়।
৬. কখনো কখনো গোড়ালি শক্ত মনে হয়।
৭. আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে ও গরম অনুভব হয়।
৮. পায়ের পাতা একটু অবশ বা প্যারালাইসিস ভাব হয়।
রোগ নির্ণয়-
রোগ নির্ণয় জরুরি, সঠিক চিকিৎসার প্রথম শর্ত সঠিক রোগ নির্ণয়।
১. রক্ত পরীক্ষা
২. এক্স-রে
৩. এমআরআই
৪. হাড়ের স্ক্যান
চিকিৎসা-
১.জীবনধারা পরিবর্তন।
২. খালি পায়ে হাটা নিষেধ।
৩. জুতার পাল্টানো যেমন- সঠিক মাপের জুতা পরিধান করা, নরম সোল ব্যবহার করা, হিল কুশন, হিল প্যাড, ইনসোল ফুট ব্যবহার, আর্চ সাপোর্ট দেয়া, গোড়ালির কাছে ছিদ্র করে নেয়া ইত্যাদি।
৪. শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা।
৫.চিকিৎসকের নির্দেশমত পায়ের ব্যায়াম নিয়মিত করবেন। প্রত্যহ ১০ মিনিট কুসুম গরম পানিতে দুই বেলা পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন।
৫. নতুন ব্যথায় ঠান্ডা সেক কার্যকরী।
৬. সাত (০৭) দিন বিশ্রাম নিতে পারেন।
৭. গোড়ালি ব্যথায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকরী ও নিরাপদ চিকিৎসা , তা হতে হবে সঠিক ও বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। তাই প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।
লেখক: ফিজিওথেরাপি, ডিজএবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট, সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।
Development by: webnewsdesign.com