সবচেয়ে জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পেঁপে। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রায় সব দেশেরই বড় হোটেলগুলোতে সকালের খাবারের তালিকায় এক বাটি পাকা পেঁপে থাকে। আবার ফ্রুট সালাদ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই ফল। এই জনপ্রিয়তার কারণ কেবল এর স্বাদই নয়, এতে থাকা গুণগুলোও অন্যতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, সি, কে, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্রোটিন। সেই সঙ্গে এই ফলে আরও আছে প্রচুর ফাইবার। মিষ্টি স্বাদের এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণও খুব কম। খেতে মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফল খেতে বাধা নেই। হজমের সমস্যা হলে পাকা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এটি পেট পরিষ্কার করতে বেশ কার্যকরী। আসুন জেনে নেওয়া যাক সকালে পাকা পেঁপে খেলে কী উপকার পাবেন-
ভালো রাখে হার্ট
আপনি যদি সকালে নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে দ্রুত। পেঁপেতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেইসঙ্গে এতে থাকে ভিটামিন এ, সি, ই। সকালে উঠে খালি পেটে পেঁপে খেলে তা শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে কাজ করে। এতে কমে আসে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা।
চোখ ভালো রাখে
চোখ ভালো রাখতে যেসব খাবার কাজ করে তার মধ্যে একটি হলো পেঁপে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন পাকা পেঁপে খেলে তা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়। পেঁপেতে থাকা ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিন সকালে পাকা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
যাদের খাবারে রুচি নেই, তারা নিয়মিত পেঁপে খেতে পারেন। এটি খাবারে রুচি ফেরানোর পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতে কাজ করে। স্বাভাবিকভাবে পেট পরিষ্কার হলে ক্ষুধা পাবেই। সেইসঙ্গে কমবে হজমের সমস্যা। এটি শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। হজমক্ষমতা ভালো থাকলে সুস্থ থাকে পুরো শরীরই।
ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়
পেঁপেতে কোনো ক্যালোরি নেই, কেবল ফাইবার রয়েছে। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে এক বাটি পাকা পেঁপে খেলে উপকার পাবেন দ্রুতই। শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকলে অন্য রোগের আশঙ্কাও কমে আসে।
ক্যানসারের ঝুঁকি দূরে রাখে
নিয়মিত পেঁপে খেলে কমে ক্যানসারের ঝুঁকি। কারণ এই ফলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে।
টানা বসে কাজ, কাঁধে-পিঠের ব্যথা কমাতে যা করবেন
অনেককেই দিনের অধিকাংশ সময় ডেস্কে বসে কাজ করতে হয়। কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে ঘাড় গুঁজে বসে থাকতে হয়। কেউ কেউ আবার বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে কেউ কেউ বিছানায় বা সোফায় বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেন। এসব কারণে আজকাল অনেকেরই দেখা দিচ্ছে স্পন্ডিলাইটিসের সমস্যা। এতে ঘাড়ে, কাঁধে, পিঠে ব্যথা হয়। অনেকের পিঠের নীচের অংশে বা কোমরেও অসহ্য যন্ত্রণা হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে কাঁধ থেকে হাতে বা কোমর থেকে পায়েও যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ব্যথা হলেই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। তবে তার আগে নিজেই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন-
মাঝে মাঝে বিরতি: দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হলেও মাঝে মাঝে সময় বের করতে হবে। অন্তত দুই-তিন মিনিটের জন্য উঠে সামান্য পায়চারি করে নিতে হবে। তাতে ব্য়থা দূরে থাকতে পারে। তা ছাড়া টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বহুগুণে বেড়ে যায়।
চেয়ারে নজর: কোথায় বসে কাজ করছেন সেটা দেখা খুব প্রয়োজনীয়। পিঠ সোজা রেখে বসা যায় এমন চেয়ার ভালো। তবে কাজের জায়গায় সবসময় পছন্দমতো চেয়ার পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে নিজেই বসার ভঙ্গির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। পিঠ কুঁজো হয়ে আছে এমন ভঙ্গিতে দীর্ঘক্ষণ বসা যাবে না।
ভারী জিনিস নয়: কাঁধে বা ঘাড়ে ব্যথা হলে ভারী জিনিস নিয়ে বেশি হাঁটাচলা না করাই ভালো। ভারী ল্যাপটপ ব্য়াগ নিয়ে চলাফেরা করলে ব্যথা হতে পারে। প্রতিদিনই এক কাঁধে ভারী ব্যাগ না নেওয়াই ভালো। দুই কাঁধে ঝুলিয়ে নিলে চাপ কম পড়ে। যে কাঁধে ব্য়থা, কয়েকদিন তাতে ভারী জিনিস নেওয়া উচিত নয়।
আরামদায়ক বালিশ: শোয়ার সময়েও খেয়াল রাখতে হবে। বালিশ শক্ত কি না সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ঘুমোনোর সময় ঘাড় বেঁকে যাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে পারলে ভালো। কোন বিছানায়, কোন ভঙ্গিমায় শুলে পরের দিন ঘুম থেকে উঠে ব্যথা হচ্ছে না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
নিয়মিত হালকা ব্যয়াম: ব্যথা কমাতে প্রতিদিন শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। সাঁতার হোক বা যোগব্যায়াম- অথবা নিয়মিত হাঁটা প্রতিদিন করার চেষ্টা করুন। এতে কিছুটা হলেও ব্যথা কমবে।
Development by: webnewsdesign.com