পাবনার ঈশ্বরদীতে সোনালী ধানের শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। ধানের ভালো ফলনে কৃষকের চোখে মুখে ফুটে উঠেছিল হাসির ঝিলিক। কিন্তু ধানের বাজারদর কম হওয়ায় সেই হাসি মুখ এখন মলিন। ধানের উৎপাদন খরচ হিসাব করে কৃষক লাভবান হতে পারছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে ঈশ্বরদীতে ৩ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ২৭৫ হেক্টর জমিতে আবাদ কম হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা আমন ধান কাটা শুরু করেছেন। অনেকেই ধান কেটে শুকানোর জন্য মাঠে ফেলে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ আঁটি বেঁধে মাড়াই করছেন। শ্রমিকের মজুরি খরচ মেটাতে কৃষকরা ধান বিক্রিও করছেন।
উপজেলার ইস্তা গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান আদম আলী বলেন, ‘১০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ হিসাব করলে ধানে লাভ হবে না। এরপরও কৃষকদের ধানের আবাদ করতে হয় তাই করি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ মণ। প্রতি মণ ধানের দাম এখন ১২০০ থেকে ১৩৫০ টাকা।’
উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আতাইল শিমুল গ্রামের কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সাত বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধান কেটে ও মাড়াই করে বাড়িতে এনেছিও। এবার সার, কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় লাভ হবে না মনে হচ্ছে।’ ইস্তা গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদিন বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে এবার ধানে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিতে হয়েছে। পাশাপাশি সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আবাদে খরচ অন্যবারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু ধানের দামতো দ্বিগুণ হয়নি। কৃষকরা বুকে কষ্ট নিয়ে নীরবে কৃষি কাজ করে গেলেও দুঃখ দুর্দশা কেউ দেখে না।’
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী সুজন কুমার রায় জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এখানে ব্রি-৪৭ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। বিঘায় ১৮ থেকে ১৯ মণ ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবে বলে আমি আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জাগো নিউজকে বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবে।
Development by: webnewsdesign.com