খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। সারকোপটিস স্ক্যাবিয়া নামের এক ধরনের পরজীবীর আক্রমণে এ রোগ দেখা দেয়। সঠিক চিকিৎসা না করালে কিডনি ও হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
পরিবারে বা হোস্টেলে একজন আক্রান্ত হলে অন্যদেরও এ রোগ হয়। যাঁরা কম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকেন, তাঁদের এটি বেশি হয়। রোগটি সাধারণত স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। ঘড়ি, চুড়ি ও আংটির নিচে জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে।
উপসর্গ
খোসপাঁচড়া হলে সারা শরীর চুলকাতে থাকে। তবে আঙুলের ফাঁকে, নিতম্বে, যৌনাঙ্গে, হাতের তালুতে, কবজিতে, বগল, নাভি ও কনুইয়ে চুলকানি বেশি হয়। রাতে বেশি অনুভূত হয়।
ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে; যা খুব চুলকায় ও তা থেকে পানির মতো তরল বের হতে পারে।
চুলকানির ফলে ক্ষত হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে অন্য সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে হাত–পায়ের তালু, মাথাসহ শরীরের যেকোনো জায়গায় খোসপাঁচড়া হতে পারে।
চিকিৎসা
সাবান দিয়ে গোসল করার পর শরীর ভালো করে মুছে শুকাতে হবে। এরপর ৫ শতাংশ পারমিথ্রিন ক্রিম গলা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের সব জায়গায় লাগাতে হবে। এরপর ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর আবার সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে। এক সপ্তাহ এভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। পারমিথ্রিন ক্রিমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ত্বক সামান্য জ্বালাপোড়া করতে পারে।
আইভারমেকটিন নামের মুখে খাওয়ার ওষুধ পাওয়া যায়, যা চিকিৎসকের পরামর্শে খেতে হয়। তবে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারী ওষুধটি খেতে পারবেন না।
রোগীর চাদর, বালিশের কভারসহ ব্যবহৃত অন্যান্য কাপড় নিয়মিত গরম পানিতে ফুটিয়ে পরজীবীমুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে পোশাক আয়রন করে নিতে হবে।
রোগ সেরে যাওয়ার পরও রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র এভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
তবে চুলকানি মানেই স্ক্যাবিস নয়। তাই রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রতিরোধ
পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক, বিছানা ও সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিবারের একজনের হলে অন্যদের হওয়ার ঝুঁকি থাকে। রোগীর ব্যবহৃত কাপড়চোপড়, গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে রোগটি হতে পারে। তাই রোগীর যেকোনো ধরনের চুলকানি হলে তাঁর বিছানাসহ কাপড়চোপড় আলাদা করতে হবে।
সুস্থ ব্যক্তিদের সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে না যাওয়া উচিত।
Development by: webnewsdesign.com