রাবির শিক্ষার্থীকে তিন ঘন্টা আঁটকে রেখে মারধর, ২০ টাকা ছিনতাই

রাবির শিক্ষার্থীকে তিন ঘন্টা আঁটকে রেখে মারধর, ২০ টাকা ছিনতাই
apps

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এক শিক্ষার্থীর গলায় চাকু ধরে ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ভাষ্কর সাহার রুমে তাকে মারধর ও ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় রাত ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামছুল ইসলাম। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।লিখিত অভিযোগে সামছুল ইসলাম জানান, তিনি মতিহার হলের ১৫৯ নং রুমের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে মোবাইল সার্ভিসিং করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং পরিবার চালান। গত ১৫ই আগস্ট মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাকে ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলে। তাঁর কাছে গেলে সে চাঁদা দাবি করে। তারপর টাকার জন্য প্রদিয়ত ফোন দেয় এবং মানসিকভাবে টর্চার করে। অর্থ দিতে অক্ষম হওয়ায় আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় ভাস্কর সাহার রুমে ডেকে নিয়ে তাঁর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে আনুমানিক ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয় এবং আরো ৬ হাজার টাকা দাবি করে।

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের জানানোর কথা বললে তাঁকে রড এবং স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়কভাবে মারা হয়। এছাড়া কাউকে জানালে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে সে অবস্থা হবে বলে হুমকি দেয়। রাত ১১ টার মধ্যে আরো ৬হাজার টাকা না দিলে হল থেকে বের করার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় এ শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।এ বিষয়ে জানতে চাইল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বলেন, এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসাতে এমন চক্রান্ত করেছে। এ বিষয়ে আমার কাছে একটি অডিও রেকর্ড রয়েছে। আমি ইতিমধ্যে অডিওটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি।রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভাস্করের সাথে কথা হয়েছে আমার। ভাস্কর বলছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এখন আমরা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নুর বলেন, এ ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করবো। শুনেছি ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইলে সার্ভিসিং করে নিজের এবং পাঁচ ভাইয়ের খরচ চালায়। তদন্ত শেষে এ ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে মারধর ছিনতাইয়ের অভিযোগে তদন্দ কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বিশয়টি নিশ্চিত করেন।তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্দ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান প্রক্টর।

Development by: webnewsdesign.com