জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে জনগণের ওপর কী প্রভাব পড়ছে তা মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। এতে সব কিছুর ওপর প্রভাব পড়ে। এই প্রভাব মানুষের ওপর কতটা প্রকট আকারে পড়ে তা মূল্যায়ন করবে সরকার। গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেলের দাম কেন বাড়ল, তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর বাইরে আমি কিছু বলব না। যাঁরা এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সবাইকে নিয়েই বসবেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এপ্রিল, মে ও জুনে দেশে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির রেকর্ড হয়। জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে এসেছিল। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে এই মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেলের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তেলের দাম বাড়লে সব কিছুর দামই বাড়ে। এটা স্বাভাবিক। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই করা হবে। বারবার বলে আসছি বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে। সেখানে কমলে এখানেও কমবে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাদের মতো করে দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। এখন দাম বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে পণ্যমূল্য বাড়ছে। এর প্রভাব পড়বে মানুষের জীবনযাত্রা ও উৎপাদনমুখী সব কর্মকাণ্ডে। তিনি বলেন, এখন এই প্রভাব কতটা প্রকট হতে পারে বা কতটা সহনীয় থাকবে সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটা প্রভাব মূল্যায়ন করবে। পাশাপাশি অর্থনীতির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গরিব মানুষ কষ্টে আছে। তাদের জন্য সরকার কী করবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সবার জন্যই সরকার। এ ধরনের পরিস্থিতিতে গরিব মানুষের কষ্ট অনেক বেশি হয়। তাদের কষ্ট লাঘবে সরকার ওএমএস, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তবে নতুন করে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা থেকে গরিব মানুষকে সুরক্ষা দিতে আরো কী সহায়তা দেওয়া যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি একটি বৈশ্বিক সংকট। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের দেশে দেশে বাড়ছে। যারা যুদ্ধ করছে তাদেরও বাড়ছে, যারা যুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে তাদেরও বাড়ছে। বাংলাদেশেও তার প্রভাব আছে। তবে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে। শিগগিরই ডলারের দাম স্বাভাবিক হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো কিছুই নিয়মের বাইরে হওয়া উচিত নয়। ব্যাংক চলে নিয়মের মধ্যে। নিয়মেই বলা আছে কী পরিমাণ টাকা ব্যাংকে রাখা যাবে, কী পরিমাণ বিনিয়োগ করা যাবে। আরো কী করতে হবে সেটিও বলা আছে। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে শাস্তি পেতে তো হবেই। তিনি বলেন, আপনার ব্যাংকে আপনি কত টাকা রাখতে পারেন, ডলার কত রাখবেন, ক্যাশ টাকা কত রাখবেন, সেটির বিষয় আছে। এর বাইরে যদি রাখেন, তাহলে মনে হবে অন্য কিছু করছেন।
Development by: webnewsdesign.com