চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির শিক্ষাজীবনের ১৬ বছর

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির শিক্ষাজীবনের ১৬ বছর
apps

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির ১৬ বছর ও সাধারণ সম্পাদকের শিক্ষাজীবনের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তারা শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির ছড়িও এই দুজনেরই হাতে।বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ছাত্রত্ব থাকার কথা না থাকলেও তাদের দাবি, ছাত্রত্ব রয়েছে।

আধিপত্য ও অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত থাকায় অছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলছেন সাবেক শিক্ষক সমিতির নেতারা।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলছেন, অছাত্র, মামলার আসামিদের শিক্ষার্থী থাকার কোনো সুযোগ নেই।জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।ক্যাম্পাসে একে একে ১৬ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি রেজাউল হক রুবেল।

পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে ২০১০ সালে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন ২০১৩ সালে। এত বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের নেতা তিনি।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হন ১১ বছর আগে। তিনি স্নাতক পাস করেছেন ২০১৬ সালে। শেষ করেননি স্নাতকোত্তর। ছয় শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতক ও দুই শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতকোত্তর পাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে।আইন অনুযায়ী ছাত্রত্ব থাকার কথা না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দাবি, তাদের দু’জনের ছাত্রত্ব রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, একটা গোষ্ঠী আমার পেছনে লেগেছে। আমরা রাজনীতি করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছাত্রত্ব আছে। পাশাপাশি আমার একটা ইমপ্রুভমেন্ট আছে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, মাস্টার্সের একটা ইন্টার্নশিপের রিপোর্ট, ওইটা জমা দিয়ে দিলে শেষ হয়ে যাবে।তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ ছাত্রলীগের কমিটি করা সম্ভব হয়নি। ছাত্রলীগের কমিটি জট কাটানো গেলে সাবেকদের ক্যাম্পাসে থাকার সুযোগ থাকবে না বলে মনে করেন তৃণমূল পর্যায়ের ছাত্রলীগের নেতারা।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল হাসান দিনার বলেন, যদি পদ পদবি ও সাংগঠনিক পরিচয়গুলো থাকে, যেকোনো ঘটনায় আমরা তাদের শনাক্ত করতে পারি এবং যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারি।

আধিপত্য ও অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত থাকার কারণে ছাত্রত্ব না থাকার পরও ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতির।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে চাকরিতে যাওয়ার কথা অথবা যদি কেউ রাজনীতি করে তাহলে যুব রাজনীতি করা, অতঃপর যুব রাজনীতি ছেড়ে মূল সংগঠনের রাজনীতি করার কথা। যেহেতু এটা হচ্ছে না, তার মানে রহস্যজনকভাবে যেটি আছে তা হলো কোনো রকমে আধিপত্য বা অর্থনৈতিক স্বার্থ বা অন্যান্য কোনো স্বার্থ জড়িত আছে বলেই এটা করা সম্ভব হচ্ছে না।

মামলার সঙ্গে জড়িত, চাঁদাবাজ ও অছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কিংবা হলে থাকার কোন সুযোগ নেই বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট আকারে আমাদের কাছে কেউ পাঠায় তাহলে আমরা এর বিরুদ্ধে অবশ্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেব।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com