শিগগিরই মন্ত্রিসভায় উঠছে শিক্ষা আইন ২০২২-এর খসড়া। প্রস্তাবিত আইনে কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে পড়াতে না পারলেও প্রতিষ্ঠানের বাইরে কোচিং সেন্টারে যুক্ত থাকতে পারবেন শিক্ষকরা।শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোচিংয়ে শিক্ষকদের পাঠদানের সুযোগ দেয়া হলে শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ হারাবেন তারা। সম্প্রসারিত হবে কোচিং বাণিজ্যও। আর নতুন আইনে নোট-গাইড নিষিদ্ধ হলেও বৈধতা পেয়েছে-সহায়ক বই।
তাই সহায়ক বইয়ের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা না হলে বাজার দখল করবে নোট-গাইড এমন শঙ্কা শিক্ষাবিদদের।কোচিং সেন্টার। যাকে উন্নত বিশ্বে শ্যাডো এডুকেশন সেন্টার বা ছায়া শিক্ষাকেন্দ্র বলা হয়। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে সমালোচনার মুখে এ পদ্ধতি। নানা সময়ে প্রশ্নফাসেঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন কোচিং সংশ্লিষ্টরাই। তাই বাধ্য হয়েই পাবলিক পরীক্ষা চলাকালীন প্রতিবছরই সরকারকে বন্ধ করতে হয় কোচিং সেন্টার। ২০১৯ সালে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণেও কোচিং সেন্টারকে বলা হয়-নতুন অপরাধ।তবে প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষা আইনে কোনো শিক্ষক কোচিং সেন্টারে নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীকে পড়াতে না পারলেও যুক্ত থাকতে পারবেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরের কোচিংয়ে।
শিক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরতদের জন্য কোচিংয়ে পাঠদানের সুযোগ রেখে স্কুল-কলেজে শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিতদের কোচিংগামিতা বন্ধ করতে না পারলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মনোযোগ হারাবেন শিক্ষকরা। অন্যদিকে বাড়বে কোচিং বাণিজ্য।গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী সময় সংবাদকে বলেন, যারা উচ্চশিক্ষায় পড়ছেন, অর্থের সংস্থান করার জন্য কোচিংয়ে জড়িত হয়ে থাকেন, প্রাইভেট পড়ানোতে জড়িত হয়ে থাকেন। সেগুলো আইনের মাধ্যমে বন্ধ বা নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। শিক্ষকরা যাদের সরকার এমপিও দিয়ে থাকেন, তারা যাতে কোনোভাবেই কোচিং বাণিজ্যে জড়িত হতে না পারেন। তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন অনুযায়ী নোট বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা না গেলেও সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে বাজারে থাকবে- সহায়ক বই । কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আইনে সহায়ক বইয়ের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা না হলে সহায়ক বইয়ের নামে চলবে নোট-গাইডের ব্যবসা, যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ধ্বংস করবে।রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, সহায়ক বইটাকে যে বৈধতা দেয়া হলো তার মধ্যে দিয়ে নোট-গাইড বইয়ের বিস্তার ঘটবে কিনা সেটা নিয়ে আমরা সন্দিহান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান বলেন, সব বিষয় নিয়েই ব্যাখ্যা দিতে হবে। যারা দুষ্ঠু নোট-গাইড নিয়ে সহায়ক বই প্রকাশ করবে।এ ছাড়া শিক্ষকদের জন্য আলাদা কাঠামোতে বেতন প্রদানসহ শিক্ষা মানোন্নয়নের নানা পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
Development by: webnewsdesign.com