দেশে চলমান ডলার-সংকট ঠেকাতে দামি গাড়ি, প্রসাধনী, স্বর্ণালংকারসহ বেশকিছু পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে আমদানি পর্যায়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে, এসব পণ্য আমদানিতে এখন থেকে আমদানিকারকেরা ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না। এছাড়াও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আমদানির ঋণপত্র খোলার সময় নগদ জমার হার।
গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ এসংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে।নতুন শর্ত অনুযায়ী, এখন থেকে বিলাসবহুল পণ্য আমদানির ঋণপত্র খুলতে হলে ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে। এতদিন ৭৫ শতাংশ মার্জিন ছিল।এছাড়া অন্যান্য এলসির ক্ষেত্রে মার্জিন হার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আমদানির এলসির নগদ মার্জিন গ্রাহকের নিজের অর্থ থেকে পরিশোধ করতে হবে; এ জন্য কোনো ধরনের ব্যাংক ঋণ পাবে না।
তবে শিশুখাদ্য, জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানির ঋণপত্র এ নির্দেশনার বাইরে থাকবে। ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং বহির্বিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার লক্ষ্যে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার পুনর্নির্ধারণ করা হলো।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে-মোটর কার (সেডানকার, এসইউভি, এমপিভি ইত্যাদি), ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রসাধনী, আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী, ফল ও ফুল, নন সিরিয়াল ফুড যেমন অ-শস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়; যেমন টিনজাত খাদ্য, চকোলেট, বিস্কুট, জুস, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়, তামাক, তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্যসহ অন্যান্য বিলাসজাতীয় পণ্যের আমদানি ঋণপত্রের জন্য ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
অন্যদিকে, অত্যাবশ্যকীয় নয়-এমন পণ্যের ঋণপত্রের জন্য ৭৫ শতাংশ মার্জিন রাখতে হবে। বলা হয়েছে, ১০০ শতাংশ ও ৭৫ শতাংশ মার্জিনে আমদানি করা পণ্যের ঋণপত্র স্থাপনের বিপরীতে প্রয়োজনীয় মার্জিন গ্রাহকের নিজস্ব উৎস থেকে দিতে হবে। নগদ মার্জিনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আমদানিকারককে কোনো ঋণ দিতে পারবে না।
Development by: webnewsdesign.com