দেশে পর্যাপ্ত লবণ থাকার পরও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের মতে, পাঁচ লাখ টন লবণের ঘাটতি আছে। পর্যায়ক্রয়ে আরো সাড়ে তিন লাখ টন আমদানির অনুমতি দেবে সরকার।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে জানা যায়, দেশে বছরে লবণের মোট চাহিদা সাড়ে ২৩ লাখ টন।
কোরবানি ঈদে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টন লবণের প্রয়োজন হয়। চামড়া চূড়ান্ত করতে আরো ৩০ হাজার টন লাগে ঈদের পর, সেখানে মজুদ রয়েছে সাড়ে তিন লাখ টন লবণ।
জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আলী আহাদ খান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কোরবানির ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা ও ব্যবসায়ীদের মজুদ ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বুধবার দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোরবানির ঈদে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতিমুনাফা করার অভিযোগ রয়েছে। এবার এ অবস্থা ঠেকাতে লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে চামড়া ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের ৬০ শতাংশ লবণ মজুদ করেছেন। এর পরও সংকট তৈরি করা হলে বা লবণের দাম বাড়ানো হলে মামলা করবে সরকারের নজরদারি প্রতিষ্ঠান ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
তবে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, লবণ আমদানির অনুমতি না দিলে ভয়াবহ সংকট তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে শিল্প লবণের নামে খাবার লবণ আনা হলে লবণশিল্প গভীর সংকটে পড়বে। এতে মিলার, চাষি, সরকার ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লবণশিল্প মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কোরবানির ঈদ ঘিরে চামড়ার জন্য সরকার দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া ঘাটতি সাড়ে তিন লাখ টনও পর্যায়ক্রমে আমদানির অনুমোদন দেবে সরকার।
তিনি আশঙ্কা করছেন, মিয়ানমার থেকে অবৈধ লবণ ঢুকছে দেশের বাজারে। আমদানির নামে যেন অবৈধ লবণ আমদানি না হয়, এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, আসন্ন ঈদকে উপলক্ষ করে লবণের বাজারে কারসাজি ঠেকাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। দেশে লবণের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত লবণ থাকার পরও ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লবণের বস্তা এক হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এবার লবণের প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকার বেশি হবে না। এ অবস্থায় কোনোভাবেই লবণের দাম বেশি নেওয়া যাবে না। কারসাজি হলেই মামলা করা হবে।
কোরবানির পশুর চামড়ার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদে চামড়া নিয়ে গতবারের মতো অবস্থা তৈরি হতে দেওয়া হবে না। গত কোরবানিতে লবণের অভাবে চামড়া পচে যাওয়ায় নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। ট্রাক থেকে চামড়া ফেলে দেওয়া হয়েছিল। কেউ কারসাজি করে যেন লবণের দাম বাড়াতে না পারে, এ জন্য গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর, অধিদপ্তরও কঠোর অবস্থানে।
Development by: webnewsdesign.com