অধূমপায়ী ব্যক্তি যখন ধূমপানকারীর তামাকের ধোঁয়া কিংবা অন্য কোন জ্বালানী হতে নির্গত ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসে তখন তাকে পরোক্ষ ধূমপান বলা হয়ে থাকে। পরোক্ষ ধূমপান প্রত্যক্ষ ধূমপানের মতই ক্ষতিকর। কারণ, এতে রয়েছে নিকোটিন, ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানসহ আরো নানা রকম বিষাক্ত উপাদান, যা দেহের অনেক ক্ষতিসাধন করে থাকে। পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসা যেকোন শ্রেনী বা বয়সের ব্যক্তিই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে কিছু শ্রেনীর মানুষ অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
পরোক্ষ ধূমপান হৃদপিন্ড ও রক্তনালীর নানা রোগ সৃষ্টি করে :
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মৃত্যুবরণ করে থাকে। অধূমপায়ী যারা বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসে তাদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি ২৫-৩০% বৃদ্ধি পায় এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি ২০-৩০% বাড়িয়ে দেয়।
পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করে :
পরোক্ষ ধূমপানে প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। যার মধ্যে কমপক্ষে ৭০টি উপাদান ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। অধূমপায়ীরা যারা বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসে তাদের ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ২০-৩০% বৃদ্ধি পায়। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে প্রতি বছর মার্কিন অধুমপায়ীদের মধ্যে প্রায়ই ৭ হাজার ৩০০ জনের ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুবরণ করে।
‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’ (SIDS) বা শিশুর আকস্মিক মৃত্যু :
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ধূমপান SIDS-এর ঝুঁকি বাড়ায়। তাছাড়াও যেসব শিশু জন্মের পর পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসে তাদেরও SIDS-এর ঝুঁকি বেশি থাকে এবং ফুসফুসে নিকোটিন ও কোটিনিন উচ্চ মাত্রায় থাকে।
তাছাড়াও পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসা শিশুদের নিম্নোক্ত সমস্যা হওয়ার আশংকা বেশি থাকে :
* ঘন ঘন কাশি, হাঁচি বা শ্বাসকষ্ট, * প্রায়শই কানের প্রদাহ, * শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যেমন ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া বা হাঁপানি, * চোখের ছানি এবং দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়া, * আচরণগত সমস্যা এবং শেখার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি।
ক্ষতি এড়ানোর সর্বোত্তম উপায় হল যেখানে ধূমপান করা হয় সেখান থেকে দূরে থাকা। সাধারনত পরিবারের কেউ বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু তামাকজাত দ্রব্য ধূমপান করার কারণে পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শ ঘটে। সেক্ষেত্রে তাদের এবং আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ধূমপান ত্যাগ দেওয়ার পরামর্শ দিন। লেখক : ডেপুটি ম্যানেজার, মেডিক্যাল সার্ভিস, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
Development by: webnewsdesign.com