ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত

সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত
apps

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত । পহেলা ফাল্গুন। বসন্তের প্রথম দিন। একইসঙ্গে ১৪ই ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বসন্ত আর ভালোবাসায় একাকার দিন। বসন্ত বরণ আর ভালোবাসা দিবস উদ্‌যাপনে নানা দিকে নানা আয়োজন। প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে এ দিন ফুলের চেয়ে ভালো কিছু নেই। তাই ফুলের বাজারে উপচেপড়া মানুষের ভিড়।

চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়ে গেছে ফুলের দামও। রোববার নগরীর বিভিন্ন ফুলের দোকানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। নগরের বিভিন্ন অলি-গলিতেও বাহারি সব ফুল দিয়ে পসরা বসিয়েছেন অনেকে। এসব দোকানেও ক্রেতারা ভিড় করেন ফুল কেনার জন্য। পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে কদর বেড়েছে সব ধরনের ফুলের। এ জন্য দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। অন্য সময় ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হওয়া একটি লাল গোলাপ এদিন ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবুও ভালোবাসার মানুষের জন্য ফুল কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
ভালোবাসা দিবসে একমাত্র স্ত্রীকে চমকে দেয়ার জন্য বড় একটি ফুলের তোড়া কিনেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মিজান চৌধুরী। তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবসটি স্মরণীয় করতে স্ত্রীর জন্য ফুল নিলাম। এটা দেখে সে খুব বেশী খুশি হবে। যদিও ফুলের দাম এবার একটু বেশি। কিন্তু স্বামী হিসেবে স্ত্রীকে সব সময় হাসিখুশি দেখতে চাই। তাই ভালো দেখে একতোড়া ফুল নিলাম।
ভালোবাসার অর্ধযুগ পূর্তিতে প্রেমিকার জন্য ছয়টি লাল গোলাপ আর ফুল দিয়ে তৈরি মাথার রিং কিনেছেন রাব্বি হোসেন। ভালোবাসা দিবসে এই গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন প্রেমিকাকে। রাব্বি বলেন, ক’দিন আগে আমাদের ভালোবাসার ছয় বছর হলো। তাই ছয়টি লাল গোলাপ কিনলাম। এটা দিয়ে শুভেচ্ছা জানালে মানুষটি খুব খুশি হবে। মাথায় ফুলের রিংটা পরলে তাকে সুন্দর লাগবে। ভালোবাসা দিবসে দুজন একসঙ্গে ঘুরবো। তাই দিনটিকে উৎসবমুখর করতেই একটু প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অনলাইনে সব সময় ফুল, চকলেট, চুড়িসহ বিভিন্ন জামাকাপড় বিক্রি করেন পাভেল নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি জানান, ভালোবাসা দিবসের জন্য তাদের ফুলের চাহিদা অনেক বেড়েছে। দু’দিন ধরে অনেক অর্ডার আসছে। তারাও ক্রেতাদেরকে সময় মতো ফুল পৌঁছে দিচ্ছে। ফুলের দাম প্রসঙ্গে পাভেল বলেন, এবার ফুলের দাম অনেক বেশি। আগে যেসব ফুলের তোড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় কিনতাম তা আজ দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। আর একটা গোলাপ আগে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে কিনতাম তা এখন ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চায়না গোলাপ ১৩০ টাকার নিচে দিচ্ছে না। তাও ক্রেতাদের চাহিদা রয়েছে। দাম বেশি হলেও ক্রেতারা সেদিক চিন্তা না করে মনের মানুষকে ফুল দিয়ে ভালোবাসার কথা জানাতে চায়। আমরাও তাই বেশি করে ফুল কিনে রাখছি।
তুলিকা নামের ফুলের দোকানি মফিজুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারি আর মার্চ মাস ফুল বিক্রির মৌসুম। এই সময়ে সব ধরনের ফুলের চাহিদা থাকে। এই দুই মাসে দেশে অনেক অনুষ্ঠান হয়। এসব অনুষ্ঠানের জন্য অনেক ফুলের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া একমাস বইমেলা থাকায় অনেকে ফুল দিয়ে সেজে মেলায় ঘুরতে যান। পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসে এই চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই দামও অন্য সময়ের চেয়ে বেশি হয়।
ভ্যালেন্টাইনস ফ্লাওয়ার নামের একটি দোকানে দীর্ঘদিন ধরে ফুল বিক্রি করেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে ফুলের চাহিদা বাড়ছে। ২০ বছর আগে আমরা আগে ৩০ পয়সা করে গোলাপ ফুল বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন একটা বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০ টাকা করে। গতবছর আমরা ৬ টাকায় যেই গোলাপ কিনতাম তা এবার ৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এই গোলাপ ৫০ টাকা বিক্রি না করলে আমাদের লাভ হয় না।

 

Development by: webnewsdesign.com