শীত এলেই বাঙালির মনে আসে শীতের পিঠার কথা। পিঠা ছাড়া বাংলার শীত পরিপূর্ণ হয় না। পিঠা খাওয়ার রীতি বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ। কথায় আছে ‘শীতের পিঠা, খেতে ভারি মিঠা’। তাই শীত এলেই এক শ্রেণীর মানুষ ভিড় জমায় পিঠার দোকানগুলোতে। খাওয়ার পাশাপাশি আড্ডাও জমে ওঠে এসব পিঠার দোকানে। পিঠা খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, গান আর আড্ডায় মেতে ওঠেন রাবির শিক্ষার্থীরা। বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে পিঠা খাওয়া আর আড্ডা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে, খালেদা জিয়া হলের সামনে, শেখ রাসেল স্কুল মাঠে বসে পিঠার দোকান। সবচেয়ে বেশি জমে উঠেছে রোকেয়া হলের সামনের দোকানগুলো। বিকাল হলেই পিঠার দোকানের আশপাশে বসে ছোট ছোট পিঠার আড্ডা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পিঠা আসরে গিয়ে দেখা যায়, অনেকগুলো চুলায় একসঙ্গে পিঠা তৈরি হচ্ছে। আতপ চালের আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিতই পিঠা আর সেদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা। সাত রকমের ভর্তা তৈরি করে প্লেটে সাজিয়ে দিচ্ছেন গরম গরম পিঠা শিক্ষার্থীদের আড্ডায় পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা। । ভর্তাগুলো হচ্ছে চিংড়ি ও মাছের শুঁটকি, বেগুন, কাঁচামরিচ, ধনিয়া পাতা, কালিজিরা ভর্তা। পিঠার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তার প্লেটও চলে যাচ্ছে পিঠার আসরে। গরম পিঠা আর তার সঙ্গে নানা রকম ভর্তায় আসর যেন আরো জমে ওঠে।
ক্যাম্পাসের ছোট্ট পিঠার দোকানে বন্ধুরা মিলে যখন একসঙ্গে পিঠা খাওয়া হয়, তখন নিজের অজান্তেই মনে পড়ে যায় গ্রামের বাড়িতে চুলার ধারে বসে মায়ের হাতের পিঠা খাওয়ার কথা। তাই তো পরিবার-পরিজন থেকে শত শত মাইল দূরে ক্যাম্পাস যেন আরেকটা পরিবার।
পিঠা খেতে আসা ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফাজানা আক্তর (আয়েশা) বলেন, এখানকার পিঠা খেতে অসাধারণ। তাই তো বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খেতে এসেছি। আর সঙ্গে চলছে আড্ডা। আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গেও পিঠা খেয়ে থাকি। কিন্তু সেখানকার মজা আর এখানকার পিঠা খাওয়ার মজা আলাদা। বন্ধুদের সঙ্গে বসে পিঠা খাওয়া আর আড্ডা দেয়ার যে অনুভূতি থাকে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তা হয়তো হয়ে ওঠে না। তাই এ পিঠা খাওয়া ও আড্ডা দেয়ার মজাটা অসাধারণ।
পিঠা বিক্রেতা শুকুর আলী জানান, আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে চার বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। এখানে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি করি। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও পিঠা খেতে আসেন। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও অনেকে আসেন পিঠা খেতে।
Development by: webnewsdesign.com