শৈলকুপা উপজেলার ভাটবাড়িয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের পরিবারে যেন কান্না থামছেই না। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মা। শিশুসন্তান নিয়ে দিশাহারা স্ত্রী। নির্বাচনী সহিংসতা আর আধিপত্যের জেরে জসীম উদ্দিনের মতো খুন হয়েছে আরও ৬ জন। স্বজনহারা পরিবারগুলোতে চলছে আহাজারি। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আধিপত্য বিস্তার আর নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে দ্বন্দ্বে ১৬ দিনে খুন হয়েছেন ৬ জন। আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
ঘটছে ভাংচুর, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। সচেতন মহল বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই এ সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব রোধ করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ আর পুলিশ বিভাগের নিরপেক্ষতা। খুনের ঘটনায় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বাড়িঘর, দোকানপাট। নাজেহাল হয়ে অনেকেই প্রাণভয়ে স্ত্রী সন্তানের মায়া ত্যাগ করে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের অসহযোগিতা ও দূরদর্শিতার অভাবকেই দোষ দিচ্ছেন নিহতের স্বজন ও গ্রামবাসী। দ্রুত সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আর আসামি গ্রেপ্তারের দাবি নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর। জানা গেছে, নির্বাচনী সহিংসতা আর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শৈলকুপা উপজেলায় ১৬ দিনে প্রাণ গেছে ৬ জনের। খুনের ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৬৯ জনকে। এ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে মাত্র ২০ জন আসামিকে। নিহতরা হলেন, শৈলকুপায় উপজেলার কবিরপুর গ্রামের আহাম্মদ শেখের ছেলে স্বপন শেখ, কীর্তিনগর আবাসনের বাসিন্দা হারান বিশ্বাস, ভাটবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর ছাত্তারের ছেলে জসিম হোসেন, বারইহুদা গ্রামের কল্লোল খন্দকার, কাতলাগাড়ী এলাকার আব্দুর রহিম ও অখিল বিশ্বাস। ঝিনাইদহ সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি সায়েদুল আলম জানান, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতার মাধ্যমে পুলিশের নিরপেক্ষ কঠোর হস্তক্ষেপই সম্ভব এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা। তা না হলে এ সংঘাত চলতেই থাকবে। শৈলকুপার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সহিংসতা এড়াতে শৈলকুপার বিভিন্ন গ্রামে এখনো পুলিশের টহলদল কাজ করছে।
Development by: webnewsdesign.com