রাজশাহীতে ইউএনওর বিরুদ্ধে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ায় রাকিবুল সরকার পাপুল নামের এক কলেজ শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। ইউএনওর বিরুদ্ধে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ায় ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান শেলী এ শোকজ দেন। ওই নোটিশের জবাব আগামী পাঁচকার্য দিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি সকালে ওই কলেজের পিয়নের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের কাছে শোকজ নোটিশ পৌঁছানো হয়। ফলে ৬ জানুয়ারি দুপুরের দিকে শোকজ নোটিশের জবাব দিয়েছেন বলে জানান ওইকলেজের শিক্ষক । কিন্তু জবাবে কি বলা হয়েছে তা জানা যায়নি।
জানা গেছে, তানোর উপজেলা প্রশাসকের (ইউএনও) বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির বিরুপ আপত্তিকর মানহানি মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার দায়ে সরকারি আব্দুল করিম সরকার ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাকিবুল সরকার পাপুলকে কারণ দর্শানের শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক তানোর পৌর সদরের আমশো মথুরাপুর মহল্লার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার বাড়ি।। তিনি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
রাকিবুল সরকার নামে ফেসবুক আইডি থেকে জানা যায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দোহাই দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে এক নজিরবিহীন চাঁদাবাজির নাটক দেখল তানোরের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, যা তারা বাপ-দাদার আমলে কখনও দেখেনি। সুবর্ণজয়ন্তী যেমন, তেমন জনগণের রক্ত ঘাম ঝরানো টাকায় তারা কোর্ট বিলাসিতা আর রাজকীয় খানাপিনায় পেটপুজা ভালোই করেছেন তা সহজেই বোধগম্য।
চাঁদাবাজির টাকাই কর্তাব্যক্তিদের আয়োজন ষোলআনা হলেও বিজয় দিবসের সকালে ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের জন্য কোনো নাস্তর ব্যবস্থা ছিল না, যা তানোরের সাধারণ মানুষকে লজ্জিত মর্মাহত ও দুঃখিত করেছে। এ নির্লজ্জ বেহায়া প্রশাসনের কর্তাকে সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
পাপুল সরকারের এমন মন্তব্যে গণচাঁদাবাজির টাকায় বিজয় দিবসে ইউএনওর গণনাটক এমন মানহানিকর বিরুপ মন্তব্য করে ১৪ ডিসেম্বর ফেসবুকে ইউএনওর বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। সারোয়ার নামে ফেসবুক আইডি থেকে। তবে বেশ কয়েক দিন পরে সারোয়ার ইউএনওর বিরুদ্ধে ওই স্ট্যাটাস তার আইডি থেকে ডিলিট করে দেয়।
কিন্তু সারোয়ারের ওই আইডির কমেন্টে ও নিজের ফেসবুক আইডি থেকে কলেজ শিক্ষক রাকিবুল সরকার ইউএনওর বিরুদ্ধে এমন বিরুপ মন্তব্য করেন তিনি। ফলে এখনও তার আইডিতে ভাসছে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ফলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে ইউএনওর নির্দেশে গত ২ জানুয়ারি সকালে ওই কলেজের পিয়নের মাধ্যমে শিক্ষক রাকিবুল সরকারের কাছে কারণ দর্শানোর শোকজ নোটিশ দেন অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান শেলী।
এ নিয়ে কলেজ শিক্ষক রাকিবুল সরকার পাপুল বলেন, বিজয় দিবস নিয়ে ইউএনওর বিরদ্ধে তার ফেসবুক স্ট্যাটাস কমেন্ট ও লাইক দিয়ে মানুষ প্রমাণ করেছে। আর কলেজ অধ্যক্ষের শোকজের জবাব দেওয়ার বৃহস্পতিবার শেষ দিন ছিল। অধ্যক্ষের সম্মান রক্ষার্থে শোকজের জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে তানোর সরকারি আব্দুল করিম সরকার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান শেলী বলেন, ফেসবুকে ইউএনও স্যারের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ার দায়ে শিক্ষক রাকিবুল সরকার পাপুলকে পাঁচকার্য দিবসের মধ্যে শোকজ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে ইউএনও মহোদয় এই কলেজের সভাপতি নয়, তিনি একাডেমিক কাউন্সিলর হিসেবে আর্থিক লেনদেনে তার এবং আমার যৌথ স্বাক্ষরে কলেজের আর্থিক লেনদেন হয় বলেও জানান অধ্যক্ষ।
এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে অধ্যক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Development by: webnewsdesign.com