মিথ্যা ঘোষণায় আমদানিকৃত সিগারেটের জাল স্ট্যাম্পের একটি পণ্য চালান খালাস গ্রহণের অপচেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃক কাস্টমস এর বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়। আমদানিকারক কর্তৃক এই পণ্য চালানটি খালাস নেয়া সম্ভব হলে সরকারের প্রায় ১৩০ কোটি রাজস্ব হানি ঘটতো বলে জানা গেছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর কর্তৃক এই ঘটনায় ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি তদন্তের জন্য যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মুনাওয়ার মুরসালীন (উপ-পরিচালক), আলমগীর হুসেন (সহকারী পরিচালক), মাশরেকী ইলিয়া কাজান (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) এবং আব্দুল আউয়াল (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা)।
কমিটি কর্তৃক প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাপ্পু এন্টারপ্রাইজকে (জি.এ ভবন ২য় তলা, অন্দরকিল্লা, কোতয়ালী, চট্টগ্রাম) ইতোপূর্বেও সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি এসোসিয়েটস লিমিটেড এর সহায়তায় ৭টি বিল-অব-এন্ট্রি-তে ‘এ-৪ পেপার’ ঘোষণায় পণ্য খালাস করেছে। সন্দেহ করা হচ্ছে যে, এই প্রতিষ্ঠানটি ঐসব চালানেও একইরূপ জাল ব্যান্ডরোল খালাস করেছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি হয়েছে মর্মে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি কোন কোন সিগারেট ফ্যাক্টরি ঐসব ব্যান্ডরোল ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দিয়ে থাকতে পারে তা অনুসন্ধান করবে।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সিগারেট খাত থেকে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট রাজস্ব আহরণ করে। সিগারেট ফ্যাক্টরি থেকে বাজারজাতকরণের প্রাক্কালে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যান্ডরোল প্রতিটি সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একটি বিশেষ টিম মিথ্যা ঘোষণায় ‘এ-৪ পেপার’ ঘোষণায় জাল ব্যান্ডরোল খালাসকালে আমদানিকারক বাপ্পু এন্টারপ্রাইজের একটি পণ্য চালান আটক করে। চালানটি চীন হতে আমদানি করা হয়।
গঠিত কমিটি কর্তৃক ইতোমধ্যে বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠানটির মূসক নিবন্ধন ফর্ম-২.১ এ উল্লিখিত ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যাংক হিসাব তলব করেছে।এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির নামে বা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যাংক এর তথ্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-কে অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া কমিটি কর্তৃক অনুরূপ অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠান আরাফাত এন্টারপ্রাইজের (১২৮, কাদের টাওয়ার ৪র্থ তলা, জুবলী রোড, কোতয়ালী, চট্টগ্রাম) বিরুদ্ধেও একই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এই প্রতিষ্ঠানটিও বিগত সময়ে একই সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি এসোসিয়েটস লিমিটেড এর সহায়তায় ৬টি বিল-অব-এন্ট্রি-তে ‘এ-৪ পেপার’ ঘোষণায় পণ্য খালাস গ্রহণ করেছে।
প্রতিষ্ঠান দুটির সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করে শিগগিরই ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি প্রদানে প্রচেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
Development by: webnewsdesign.com