ঠাকুরগাঁওয়ে সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দামে সার

শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১ | ১২:৩৮ অপরাহ্ণ

ঠাকুরগাঁওয়ে সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দামে সার
সংগৃহীত ছবি
apps

ঠাকুরগাঁওয়ে চাষিরা বিভিন্ন রাসায়নিক সার পর্যাপ্ত পরিমাণে পাচ্ছেন না। ডিলাররা সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সার ও কীটনাশকের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ন্যায্যমূল্যে সার কিনতে পারছেন না। ফলে অতিরিক্ত দাম দিয়ে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান কৃষকেরা।

অন্যদিকে সারের এই লাগামহীন দাম টেনে ধরতে প্রশাসনও মাঠে নেমেছে। গত দুই দিনে হরিপুর উপজেলার যাদুরানী বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করার অপরাধে ৫ ব্যবসায়ীকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মো. রাকিবুজ্জামান। ওই সময় জাহিদ ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা, সার ব্যবসায়ী মানিক হোসেনকে ১০ হাজার, জামাল উদ্দীনকে ৫০ হাজার, ঈশাহাক আলীকে ২০ হাজার ও জাহাঙ্গীর আলমকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক রাকিবুজ্জামান বলেন, যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে তাঁরা কৃত্রিমসংকট দেখি কৃষকদের সার দিচ্ছেন না। কৃষকেরা যখন সার কিনতে যান তখন ব্যবসায়ীরা নেই বলে ফেরত দিচ্ছেন। আবার কিছু কৃষকের কাছে বস্তাপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করছেন।

জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার সরকারি মূল্য ৮০০ টাকা থাকলেও কৃষকপর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৫০-৯০০ টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি তিউনিসিয়া) সরকারি মূল্য ১ হাজার ১০০ কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি মরক্কো) সরকারি মূল্য ১ হাজার ১০০ টাকা কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সরকারি মূল্য ৮০০ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়, এমওপি (পটাশ) সরকারি মূল্য ৭৫০ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত। সদর উপজেলার নতুনপাড়া গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘দুই বস্তা টিএসপি সার নিয়েছি ৩ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে। এক বস্তার দাম পড়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। একই গ্রামের কৃষক শাহিনুর আলম বলেন, ‘জমি থেকে পানি নেমে গেছে, এখন ফসল আবাদ করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে টিএসপি নিলাম ১ হাজার ৭৫০ টাকায় আর ৭৫০ টাকা বস্তার পটাশ নিলাম ৯০০ টাকা দিয়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ডিলার বলেন, ‘আমদানিকারকদের কাছে আমরা জিম্মি। সার দেওয়ার সময় নানান তালবাহানা করে। দাম বেশি নিলেও আমাদের কিছু করার থাকে না। এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হোসেন বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো ডিলারের বিরুদ্ধে সারের দাম নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Development by: webnewsdesign.com