আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজশাহীর নয়টি উপজেলায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করলেও আগাম প্রস্ততি হিসেবে স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকা পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ও সদস্য পদে একইভাবে দলীয় আনুকূল্য পেতে সংশ্লিষ্টরা দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে নিজের পক্ষে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ।
অনেকেই ঢাকায় গিয়ে দলের হাইকমান্ড ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানা তদবির-সুপারিশ শুরু করেছেন। এছাড়াও দলীয় প্রার্থীর বাহিরে অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এলাকায় জনগণ ও ভোটারদের নিকট দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করে নিরবে প্রচারণা চালাচ্ছে। রাজশাহীর নয়টি উপজেলায় ৭২টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।
নিকট অতীতের নির্বাচন অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই মনে করছেন দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সমর্থন আদায় করতে পারলে নৌকা প্রতীক নিয়ে ও অন্যান্য পদে দলীয় আনুকূল্য পেলে বিজয় সুনিশ্চিত। তাই এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সুকৌশলে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উর্ধ্বতন নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে নিজ নিজ পক্ষে শক্তিশালী সমর্থক বলয় তৈরি করে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত রয়েছেন। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে না পারলেও নানা বিয়ের অনুষ্ঠান, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অনুদান দিয়ে জনগণের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকেই মনোনয়ন ক্রয় করতে মোটা অংকের টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
তারা মনে করেন যে, মোটা অংকের টাকা দিয়ে মনোনয়ন ক্রয় করে নৌকার টিকেট বাগিয়ে নিতে পারলেই বিজয় সুনিশ্চিত। এমন ভাবনা থেকেই তারা টাকার জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে গেছেন।
তবে একটি নিরপেক্ষ ভোট পর্যবেক্ষণ সূত্র মতে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জেতার জন্য কেবল নৌকা প্রতীক নির্ভরতা যথেষ্ট নয়। প্রার্থীর ন্যুনতম প্রহণ যোগ্যতা, অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যক্তি ইমেজের ভোট ব্যাংক ফ্যাক্টর হবে।
পবা উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের মধ্যে সবকটিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বর্তমানে পুরো উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠেছে ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আলোচনা। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন আবার কে পাচ্ছেন না এসব নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রথমিক ভাবে যাদের নাম বলাবলি চলছে, তাদের মধ্যে হরিপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান এবারও নৌকা প্রতীক পেতে শতভাগ আশাবাদী।
পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী বলেন, দলের জন্য ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপাশি ব্যক্তি ইমেজসহ মাঠের রাজনীতিতে জন সম্পৃক্ততা দেখা হবে। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে মনোনয়ন সুপারিশ করা হবে না।
এদিকে, সোমবার দুপুরে নৌকা প্রতীক পেতে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিলের দলীয় মনোনয়ন জমা দেয়া হয়েছে। পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সহদপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলামের হাতে হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান নবাব ও সমাজসেবক মমতাজুল আহমেদ মন্টু এ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হুজুরীপাড়া ইউপি’র চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, দর্শনপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান কামরুর হাসান রাজ, হরিপুর ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জহিরুল বাসার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন কালু, হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মিজহাজুল আহমেদ নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ শাকিল প্রমুখ।
মনোনয়নপত্রের স্বপক্ষে বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিল দলীয় তথ্য প্রমাণ দাখিল করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক পেয়ে জয়লাভ করেন। আবারো নৌকা প্রতিকের শতভাগ দাবিদার তিনি এবং নৌকা প্রতিক পেলে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার অশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এরইমধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রথম ধাপের স্থগিত রাখা ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এসব ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে স্থগিত ৯টি পৌরসভার ভোটও একই তারিখে হবে।
Development by: webnewsdesign.com