১২৫ বছর আগে তৈরি ফোরকেতে প্রথম সিনেমা

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১:৩৭ অপরাহ্ণ

১২৫ বছর আগে তৈরি ফোরকেতে প্রথম সিনেমা
একই দৃশ্যের দুটি সংস্করণ। ডানেরটি আসল এবং বাঁয়েরটি ফোরকেতে
apps

যত দিন যাচ্ছে প্রযুক্তিদুনিয়া ততই উন্নতি লাভ করছে। থেমে নেই চলচ্চিত্র জগৎও। ১২৫ বছর আগে তৈরি করা সিনেমাটি যদি ফোরকেতে দেখা যেত, তাহলে কেমন হতো? সেই জিজ্ঞাসা থেকেই একজন ইউটিউবার তৈরি করেছেন ১২৫ বছর পুরনো এক চলচ্চিত্রের ফোরকে সংস্করণ। ১৮৯৫ সালে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রটি দেখানো হয় প্যারিসে। সেটা ছিল লুমিয়ের ভাইদের (অগাস্ট এবং লুই লুমিয়ের) ধারণ করা ফ্রান্সের উপকূলীয় শহর ‘লা শুতা’র স্টেশনে আসা একটি ট্রেনের দৃশ্য। ৫০ সেকেন্ড ব্যাপ্তির এই চলচ্চিত্রটির নাম ‘অ্যারাইভাল অব এ ট্রেন অ্যাট লা শুতা’। সেটি প্রদর্শনের সময় সত্যিকারে ট্রেন ছুটে আসছে মনে করে উপস্থিত দর্শকদের অনেকে হল থেকে পালিয়ে যান।১২৫ বছর পর সেই সিনেমাটিকে আবার নতুনভাবে উপস্থাপন করলেন ইউটিউবার ডেনিস শিরিয়াভ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সেটা রূপান্তর করলেন ফোরকেতে (4K), যাতে রয়েছে সেকেন্ড ৬০টি করে ফ্রেম।এ জন্য তিনি ব্যবহার করেছেন বিনা মূল্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংবলিত নিউরাল নেটওয়ার্কস। এটা হচ্ছে এমন একটি কম্পিউটার সিস্টেম, যা মানুষের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।আর এই কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ডিএআইএন এবং গিগাপিক্সেল এআই টুল। আসল এবং রূপান্তরিত ভিডিও দুটি পাশাপাশি তুলনা করলে দেখা যাবে, নতুন ভিডিওটি অনেক বেশি মানসম্পন্ন এবং ঝকঝকে। নতুন চলচ্চিত্রটির দৃশ্যগুলো আরো নিখুঁত এবং বিস্তারিত। এটি সম্ভব হয়েছে গিগাপিক্সেল এআইয়ের মাধ্যমে। গিগাপিক্সেল এআই হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো ছবি শনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করতে পারে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো ছবির দৃশ্যের বিষয়বস্তু শনাক্ত করে তা আরো পরিষ্কার ও ছয় গুণেরও বেশি উচ্চমানে রূপান্তরিত করা হয়। ভিডিওর ফ্রেম রেট বাড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে ডিএআইএন প্রযুক্তি।

পুরনো ভিডিওর ফ্রেমগুলোর মধ্যে নতুন ফ্রেম সংযুক্ত করার মাধ্যমে ভিডিওর ফ্রেম রেট বাড়ানো হয়। শুধু ফোরকে রূপান্তরই নয়, এই ভিডিওতে শব্দও সংযোজন করা হয়েছে।পুরো চলচ্চিত্রটির শেষের দিকে দেখা যাবে আসল চলচ্চিত্রটি সঙ্গে ফোরকেতে রূপান্তরিত চলচ্চিত্রটির একটি পাশাপাশি তুলনা। ফলে তাঁর করা ভিডিওটির দৈর্ঘ্য হয়েছে ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ড।এর মধ্যেই এটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এক সপ্তাহে ভিউ হয়েছে সাড়ে ৩০ লাখ।এখানেই শেষ নয়, অন্যদিকে ডিওলডিফাই সাইট ব্যবহার করে যে কোনো সাদাকালো স্থির ছবি এবং ভিডিওকে রঙিন ছবি বা ভিডিওতে রূপান্তর করা হয়। এটি মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কাজ করে থাকে। ডিওলডিফাই ব্যবহার করে ১৮৯৫ সালের এই সাদাকালো চলচ্চিত্রটিকে রঙিন ছবিতে রূপান্তর করা হয়েছে। সেটার দৈর্ঘ্য ৪৮ সেকেন্ড।
নিজের এই কাজ সম্পর্কে ডেনিস শিরিয়াভ বলেন, ‘এটি আমার একধরনের শখ। পুরনো চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্রগুলো নতুনভাবে রূপান্তর করতে চাই।’অ্যাপোলো চন্দ্র মিশনের ভিডিও ফুটেজকে এভাবে রূপান্তর করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

Development by: webnewsdesign.com