দেশে বর্তমানে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার দুই সপ্তাহের জন্য দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বন্ধের পাশাপাশি আরও কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন। কিন্তু সীমান্ত ঘেঁষা দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর এলাকায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারসহ সাধারণ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য বিধি না মানা ও মাস্ক পারার কোন বালাই নেই। যে কারনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুকিতে রয়েছে হিলি স্থলবন্দর। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দুই শ’ থেকে আড়াই শ, পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে চার শ’ পাঁচ শ, ভারতীয় মোটরশ্রমিক দেশে প্রবেশ করেন।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট এর মাধ্যমে দু দেশের মাঝে যাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। এতে দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে হিলিতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি একটু বেশি। গত বছর উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার নানামুখী পদক্ষেপের কারণে হিলিতে করোনা সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণের হার কমলে এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাত্রী যাওয়া বন্ধ থাকলেও ভারতে আটকে পরা যাত্রীরা দেশে প্রবেশ করছে। সেই ক্ষেত্রে স্হানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল টিমের মাধ্যমে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, করোনার প্রাথমিক ড্রপ টেস্ট, নেগেটিভ সনদসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পূর্ণ হলেও ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোন ব্যবস্হ নেই হিলি চেকপোস্ট স্থলবন্দর এর ভিতরে। এখানকার হাট-বাজার থেকে শুরু করে সব স্থানেই সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ মাস্ক পরছেন না। আবার কেউ কেউ মাস্ক পরলেও বেশির ভাগ সময়ে থাকছে থুতনিতে।
হিলি বাজারে আসা আরাফাত হোসেন বলেন, আমাদের হিলি বাজারে কোনও করোনা নেই। করোনা বলতে কোনও জিনিস এখন পর্যন্ত দেখিনি। এ কারণে মাস্ক পরার কোনও প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি। বাজারে আসা রফিকুল ইসলাম নামের অপর ব্যক্তি বলেন, করোনার টিকা দিয়েছি মুখে মাস্ক না পরলেও সমস্যা নাই। যেভাবে করোনার সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এটা আল্লাহর গজব ছাড়া কিছুই নয়। এজন্য মাস্ক পরিনি।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, বাহিরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, মাস্ক ছাড়া জনসমাগম, বিশেষ করে হাটে বাজারে না আসা, রেস্টুরেন্টগুলোতে অর্ধেক আসনের ব্যবস্থা ও টিকা সঙ্গে আনা, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি জনসমাগম না করা সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ থেকে নির্দেশনা পত্র পেয়েছি। এগুলো মানতে ইতিমধ্যে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা প্রথমেই চেষ্টা করছি জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিষয়টিকে প্রতিরোধ করতে। পরবর্তী সময়ে আইনগত ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
Development by: webnewsdesign.com