হিলিতে ভরা শ্রাবণে দেখা নেই বৃষ্টির মাঠের জমি ফেটে চৌচির

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২ | ৫:৪৫ অপরাহ্ণ

হিলিতে ভরা শ্রাবণে দেখা নেই বৃষ্টির মাঠের জমি ফেটে চৌচির
apps

ভরা বর্ষায় শ্রবণ মাসে দেখা নেয় বৃষ্টির। পানির অভাবে মাঠের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে শ্রাবণ মাস শুরু হয়েছে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। বিশেষ করে এই বিভাগের দিনাজপুর জেলায় আমন ধান চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টি না হওয়ায় মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, তীব্র তাপদহে ফসলের জমির মাটি শক্ত হয়ে গেছে। মাটিতে কোনো রস নেই, প্রায় ধানি জমি রোদের তেজে ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে।

জানা গেছে, প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণমাসে দিনাজপুরে কৃষকরা জমিতে আমন ধানের নতুন চারা লাগানোর কাজ শুরু করেন। এ সময় মাঠে বর্ষার পানিতে থৈথৈ করে, আর তাতে হাঁসতে থাকে আমন ধানের চাষিদের স্বপ্ন।কিন্তু এবারের আমন মৌসুমের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। গত দুই সপ্তাহ ধরে সূর্যের তাপের তীব্রতায় জনজীবন অতিষ্ঠ, মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস।হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন বলেন, জীবনে এমন আবহাওয়া কখনও আমি দেখিনি। এসময় মাঠ পানিতে থৈথৈ করে। এবার ক্যাম্বা বর্ষার দেখা নাই, পানি না হলে কেমন করে মানুষ আবাদ করবে। খুবি চিন্তায় আছি। কখন পানি হবে আর জমি চাষ করবো। আমন ধানের নতুন চারা রোপণ করবো।

উপজেলার বোয়ালদাড় গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, এবার যে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। এখনও বর্ষার কোনো লক্ষণ দেখছি না। গভীর নলকূপ (ডিপ) মেশিন চালু করে পানি সেচ দিয়ে জমি তৈরি করতে গেলে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। তারপরও কিছু জমি পানি সেচ দিয়ে তৈরি করতেছি কি আর করা!উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এই সময় প্রতি বছর জমিতে বর্ষার পানি জমে থাকতো। পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি তৈরি করতাম। এবার তো বর্ষা নাই, সব জমি শুকিয়ে আছে, কবে বৃষ্টি হবে আর কখন আমন ধান লাগাবো? উপায় না পেয়ে শুকনো জমি ট্রাক্টর (মেসি) দিয়ে চাষ করে রাখতেছি। এতে খরচ বেশি হচ্ছে। আর যে জমিতে রবিশস্য লাগানোর চিন্তা আছে সেগুলো পানি সেচ দিয়ে জমি তৈরি করতেছি কি আর করা! দোগাছি চারাগুলো হয়তো আর এক সপ্তাহ খানেক ভালো থাকতে পারে। আমন ধান দোগাছি চারা রোপণ করলে ফলন ভালো হয়।

এদিকে হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আমন ধান মূলত কৃষকরা দোগাছি চারা লাগিয়ে চাষ করে থাকে। আমরা মাঠ ঘুরে দেখছি প্রায় মাঠের দোগাছি চারাগুলো এখনও ভালো আছে। আগামী এক সপ্তাহ ভালো থাকবে এসব চারা। আশা করছি এর মধ্যে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে চারার কোনো ক্ষতি হবে না।তিনি আরো বলেন, যেহেতু বৃষ্টি নেই সেহেতু আমরা কৃষকদের পানি সেচের ব্যবস্থা করে জমি চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছি।

Development by: webnewsdesign.com