হাকালুকি হাওরে বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসিত হচ্ছেন কুলাউড়ার এলাইছ মিয়া

সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩ | ১:৩৯ অপরাহ্ণ

হাকালুকি হাওরে বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসিত হচ্ছেন কুলাউড়ার এলাইছ মিয়া
হাকালুকি হাওরে বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসিত হচ্ছেন কুলাউড়ার এলাইছ মিয়া
apps

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি। হওরের আয়তন ১৮.১১৫ হেক্টর। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাওরে প্রায় ৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে হাকালুকির অবস্থান।

বিশাল আকৃতির এই হাওরে কৃষক, জেলে ও পর্যটকসহ প্রতিনিয়ত নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু ছায়া নেওয়ার মতো কোনো জায়গা কিংবা গাছপালা নেই হাকালুকি হাওরে। সরকারি উদ্যোগেও নির্মাণ করা হয়নি কোনো ঘর।

তীব্র রোদে কিংবা ঝড়ে কৃষকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধান কাটার সময় রোদে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য ছায়াতে আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই বৃহত্তম এই হাওরে।

এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিজ উদ্যোগে হাকালুকি হাওরের চালিয়া এলাকায় ২০১৩ সালে একটি করচ গাছ রোপণ করেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বাদে ভুকশিমইল গ্রামের মো. এলাইছ মিয়া। গাছ রোপণের পর থেকে এটিকে বাঁচানোর জন্য সকাল-বিকেল পানি দিয়েছেন তিনি। হাওর বছরের অর্ধেক সময় পানিতে থৈ থৈ থাকে। বৃক্ষপ্রেমী হাজি মো. এলাইছ মিয়ার নিবিড় তত্ত্বাবধানে এবং পরিশ্রমে এই গাছটি এখন বড় হয়েছে। এলাইছ মিয়া পরবর্তীতে হাওরে আরও ৫টি করচ ও ইজল গাছ রোপণ করেছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শুকনা মৌসুমে প্রচণ্ড গরমের সময় কৃষক ও পর্যটকরা গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নেন। গাছটি কৃষকদের কাছে হাওরের ছাতা হিসেবে পরিচিত। এদিকে বর্ষা মৌসুমে হাওরে ঝড় হলে জেলেরা নৌকা নিয়ে গাছের পাশে আশ্রয় নেন।

এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলার বাদে ভুকশিমইল গ্রামের কৃষক গিয়াস মিয়া, ইদই মিয়া ও জিতু মিয়া বলেন, ‘জমিতে কাজ করে এসে আমরা এই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিই। গাছের নিচে বসে শান্তিতে ভাত খেতে পারি। গাছটি আমাদের ছাতার মতো কাজ করছে।’

এলাকার টলি ড্রাইভার ফরিদ মিয়া বলেন, ‘ঝড় তুফান এলে কিংবা রোদে কাজ করার পর বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। হাওরের কৃষকরা কাজ করে এখানে এসে আশ্রয় নেন। এ গাছটা আমাদের অনেক উপকারে আসে। সরকারি উদ্যোগে এ রকম গাছ লাগানো প্রয়োজন।’

বৃক্ষরোপণকারী হাজি মো. এলাইছ মিয়া বলেন, ‘বাড়ি থেকে টলি দিয়ে গাছটি এখানে এনে রোপণ করেছি। দিন ও রাতে গাছে পানি দিয়েছি। যার কারণে গাছটি জীবিত হয়ে ডালপালা ছড়িয়েছে। প্রতিদিন শত শত কৃষক গাছের ছায়ায় বসছেন। এটাই আমার সফলতা। সরকারি উদ্যোগে এ রকম গাছ লাগানো প্রয়োজন।’ পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. মাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা খুবই ভালো উদ্যোগে। সামাজিক ও মহৎ কাজে এভাবে সবার এগিয়ে আসা উচিৎ।

Development by: webnewsdesign.com